Monday , April 21 2025

মহানগর মার্কেট দখলের চেষ্টা কালে খোকন মুন্সি গ্রেপ্তার

নিজস্ব প্রতিবেদক:
গুলিস্তানে আগুনে পুড়ে যাওয়া মহানগর শপিং কমপ্লেক্স দখল করতে গিয়ে পুলিশের হাতে ধরা পড়েছে পুরান ঢাকার আলোচিত ডাকাত শহীদ ও জাহাঙ্গির-রিপনের অন্যতম সহযোগী খোকন মুন্সি। গত শনিবার রাতে দুই ব্যবসায়ীর কাছে চাঁদা দাবি করে মার্কেট দখল করতে গেলে ব্যবসায়ীরা তাকে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেন। পরে গতকাল রোববার খোকন ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে শাহবাগ থানায় চাঁদাবাজির অভিযোগে মামলা করেন মার্কেটটির এক ব্যবসায়ী। পুলিশ ও মহানগর শপিং কমপ্লেক্সের একাধিক ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, খোকন মুন্সি একসময় গুলিস্তান এলাকায় লুঙ্গি ও পুরাতন কাপর বিক্রি করতেন।

সেখ ঢাকাকেন্দ্রিক নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়েন তিনি। গ্রেপ্তার হওয়ার পর নাম-ঠিকানা যাচাই করে তার বিরুদ্ধে আরও একাধিক মামলার তথ্য পেয়েছে পুলিশ। এর মধ্যে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় রামপুরা ও খিলগাঁও এলাকায় তার বিরুদ্ধে দুটি মামলা হয়েছে। এসব মামলার অন্যতম আসামি হিসেবে খোকন মুন্সিকে চিহ্নিত করেছে পুলিশ। মামলা দুটির এজাহারে তার বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের হয়ে ছাত্রদের বিরুদ্ধে অস্ত্র সরবরাহের কথা উল্লেখ রয়েছে। এর আগে ২০০৭-০৮ সালে ডাকাত শহীদের নেতৃত্বে যাত্রাবাড়ী, শ্যামপুর, ডেমরা ও গুলিস্তান এলাকায় খোকন এবং তার সহযোগীরা ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে বলে অভিযোগ রয়েছে।

ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীরা বলেন, ডাকাত শহীদ কারাগারে থাকাকালে তার সাম্রাজ্যের দেখভালের দায়িত্বে ছিলেন খোকন মুন্সি। সন্ত্রাসী ও ডাকাত দলের সদস্যদের কারামুক্তির জন্য ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদা তুলতেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে সিটি প্লাজার এক ব্যবসায়ী দৈনিক সময়ের কাগজকে বলেন, ‘দেড় যুগ আগে থেকে খোকন এ এলাকায় শহীদ ডাকাতের সহযোগী হিসেবে পরিচিত। তাদের দলের কোনো সদস্য গ্রেপ্তার হলে চাঁদার জন্য চাপ দিতেন। মাঝখানে কিছুদিন এসব বন্ধ ছিল। কিন্তু শুনেছি সম্প্রতি আবার মহানগর মার্কেটে যাচ্ছেন।’ মার্কেটের পরিচালক ও মামলার বাদী মনির হোসেন টিটু দৈনিক সময়ের কাগজকে বলেন, ‘গত শনিবার রাত ৮ টার পর খোকন মুনশিসহ ১৫/২০ জন এসে দোকানিদের ভয়ভীতি দেখাতে থাকেন। ভাঙচুর করে মার্কেট দখল করার হুমকি দিলে দোকানিরা বাধা দেন। একপর্যায়ে পুলিশ এলে সবাই পালিয়ে যান। তখন ব্যবসায়ীরা খোককে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেন। তিনি আরও বলেন, আক্রমণের একপর্যায়ে তাদের একজন জানান, ২৫ লাখ টাকা দিলে চলে যাবেন। আবার খোকন মুনশি নিজেকে মার্কেট সমিতির সাধারণ সম্পাদক বলে দাবি করেন। কিন্তু কোনো কাগজপত্র দেখাতে পারেননি। আমরা মার্কেটের জায়গা রেলওয়ের কাছ থেকে ইজারা নিয়েছি। ৩০ বছর ধরে খাজনা পরিশোধ করে ব্যবসা করছি। আশা করছি, সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজিতে খোকনের সঙ্গে আরও যারা জড়িত, পুলিশ তাদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় নিয়ে আসবে।’ এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শাহবাগ থানার এসআই মো. জসিম উদ্দিন দৈনিক সময়ের কাগজকে বলেন, ‘মহানগর শপিং কমপ্লেক্সে হামলার ঘটনায় খোকন মুনশি নামে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আমরা খবর নিয়ে জানতে পেরেছি, খোকন মুনশির নামে খিলগাঁও এবং রামপুরা থানায় জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময়ের মামলা রয়েছে। এক মামলায় তাকে আওয়ামী লীগের অস্ত্র সরবরাহকারী হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।’

About somoyer kagoj

Check Also

যুবদল নেতা জিকু দুষলেন বিএনপি নেতা বিপ্লবকে

কুষ্টিয়া অফিস:কুষ্টিয়া সদর উপজেলার আইলচারা পশুহাটের ইজারা নেওয়ায় ইজারাদারের চাচা চাল ব্যবসায়ী আব্দুর রশিদের শহরস্থ …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *