মোঃ এমদাদুল হক, বগুড়া প্রতিনিধি:
* পরিদর্শনে সাবেক এমপি মোশারফ।
* আদালতের শরণাপন্ন হওয়ার পরামর্শ।
বগুড়ার নন্দীগ্রামে কদমকুঁড়ি পাড়ায় বসতবাড়িতে হামলা, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ ঘটনার সঙ্গে বিএনপির সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ মেলেনি। জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের ঘটনাকে ভিন্নভাবে উপস্থাপন করা হয়েছিল।
গতকাল উপজেলার বুড়ইল ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের ধুন্দার কদমকুঁড়ি পাড়ায় সরেজমিনে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন বগুড়া জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক সাবেক এমপি মোশারফ হোসেন। তার সঙ্গে দলীয় নেতাকর্মীর বহর ছিল না। স্থানীয়দের ডেকে জনসম্মুখে বিস্তারিত শোনেন বিএনপির সাবেক এমপি। বসতবাড়িতে হামলা, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগে বিএনপির কোন নেতা এসেছিল, জানতে চাইলে সদুত্তর দিতে পারেনি বগুড়া প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করা হেলালুদ্দীন হেলালের পরিবার। তারা জানায়, জায়গাটি নিয়ে প্রায় সাত বছর ধরে দুই পক্ষের বিরোধ চলছে। হামলাকারীরা এসে নিজেদের বিএনপির লোক পরিচয় দিয়েছিল বলেই গত বুধবার সংবাদ সম্মেলন করেছিলেন। সত্যতা না জেনে বিএনপির নামে অপবাদ দেওয়ায় অনুতপ্ত হয়েছেন বলেও জনসম্মুখে উল্লেখ করেন। কারো প্ররোচনায় কাউকে মিথ্যা দোষারোপ না করে তাদেরকে আদালতের শরণাপন্ন হওয়ার পরামর্শ দেন সাবেক এমপি মোশারফ হোসেন।
এসময় গ্রামবাসীসহ স্থানীয় শাজাহান আলী, আব্দুল মজিদ, হাফিজ উদ্দিন, শফিকুল ইসলাম, হোসেন আলী, নন্দীগ্রাম উপজেলা প্রেসক্লাবের দপ্তর সম্পাদক রাসেল মাহমুদ, নন্দীগ্রাম ইউনাইটেড প্রেসক্লাবের সভাপতি আমিনুল ইসলাম জুয়েল, সাধারণ সম্পাদক এমদাদুল হক, উপজেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান তারেক, ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি আমীর আলী, সাধারণ সম্পাদক কালিমুদ্দিন মোল্লা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
স্থানীয়রা জানান, ধুন্দার কদমকুঁড়ি পাড়ায় মায়ের ওয়ারিশ হিসেবে দুইপুত্র রিয়াজ ও ফয়েজ ২৪ শতক জমির সমান অংশীদার হন। ফয়েজ একাই পুরো সম্পত্তি স্থানীয় মনোয়ার ও হেলালের কাছে বিক্রি করেন। অন্যদিকে আরেক ভাই রিয়াজ মারা যাওয়ার পর ছেলে বাচ্চু মিয়া পরিবারের সমন্বয়ে তার স্ত্রীকে ১২ শতক জমি লিখে দেওয়ায় বাঁধে বিপত্তি। ২০১৭ সালে রেজিস্ট্রি হওয়া ফয়েজের দলিলমূলে সেখানে টিনের ছাউনি ঘর তুলে ১২ শতক দখল করে রাখেন হেলাল। নিরুপায় হয়ে আদালতের শরণাপন্ন হন মরহুম রিয়াজের ছেলে বাচ্চু। মামলার রায় তার পক্ষে হওয়া সত্ত্বেও দখল উচ্ছেদে ব্যর্থ হয়ে গত ১৭ জানুয়ারি সেখানে হামলা করে বাচ্চুর পরিবার। সম্পত্তি ঘিরে আদালতে দুই পক্ষরই মামলা বিচারাধীন রয়েছে।
হেলালুদ্দীন স্বীকারোক্তি দিয়ে বলেন বগুড়া সংবাদ সম্মেলনে উপজেলা বিএনপির সভাপতি আলাউদ্দিন সরকারের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সত্য নয়। ঘটনাস্থলে বগুড়া জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাধারন সম্পাদক ও সাবেক এমপি মোশারফ হোসেন ও উপস্থিত ছিলেন না। এমনকি সংবাদ সম্মেলনের কাগজে লেখা কয়েকজন বিএনপি নেতা কর্মী ঘটনাস্থলে ছিলেন না। তিনি আরো বলেন, সংবাদ সম্মেলনে আমাকে যা বলতে বলেছে আমি তাই বলেছি। কাগজে কি লিখেছে আমি বলতে পারবো না। আমি মূর্খ মানুষ আমি কিছু বুঝিনা। আমার সাথে যারা ছিল সব তারাই করেছে।
এ বিষয়ে বগুড়া জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাধারন সম্পাদক ও সাবেক এমপি মোশারফ হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, বিএনপি দলের ভাবমুর্তি ক্ষুন্ন করতে একটি মহল উঠেপরে লেগেছে। উপজেলা বিএনপির সভাপতি সহ দলের বিভিন্ন নেতা কর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রপাগান্ডা ছড়িয়ে জনমনে ভিতি সৃষ্টি করছে। এসব কুচক্রি মহলের বিষয়ে দলের নেতাকর্মী সহ সাধারন জনগনকে সজাগ থাকতে হবে। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) হচ্ছে শান্তি শৃংখলা ও উন্নয়নের দল। সুতরাং বিএনপি ও বিএনপি দলীও নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচার কারীদের কঠোর হস্তে দমন করবে দেশের জনগন।