Saturday , May 17 2025

স্থবির মহাখালী, ভোগান্তি চরমে

নিজস্ব প্রতিনিধি:
দাবি আদায়ে সকাল থেকে রাজধানীর মহাখালী রেলগেটে অবস্থান নিয়ে রেলসহ সব ধরনের যানচলাচলে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে রেখেছেন ব্যাটারিচালিত রিকশা চালকরা। তাদের অনড় অবস্থানের কারণে স্থবির হয়ে গেছে মহাখালীসহ আশপাশের কয়েক কিলোমিটার এলাকা। সব যানবাহন দীর্ঘ লাইনে ইঞ্জিন বন্ধ করে দাঁড়িয়ে আছে। তাতে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি চরমে উঠেছে।

বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) সকাল ১০টা থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত (এ রিপোর্ট লেখার সময়ও কর্মসূচি অব্যাহত ছিল) মহাখালী রেলগেটসহ আশপাশের এলাকায় সব ধরনের যানচলাচল বন্ধ আছে। এদিকে রেলগেটে রিকশা চালকরা অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছেন। যেকোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে পাশেই অবস্থান নিয়েছেন সেনাবাহিনীর সদস্যরা, অবস্থান নিয়েছে পুলিশ সদস্যরাও।

গত ১৯ নভেম্বর (মঙ্গলবার) ঢাকা মহানগর এলাকায় তিনদিনের মধ্যে ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচল বন্ধের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচল বন্ধে কর্তৃপক্ষের নিষ্ক্রিয়তা কেন বেআইনি হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন আদালত। এরপর থেকেই ঢাকায় বিভিন্ন এলাকায় আন্দোলন করছে ব্যাটারিচালিত রিকশা চালকরা।

রাজধানীর উত্তরা থেকে স্ত্রীসহ শ্যামলী পঙ্গু হাসপাতালে যাচ্ছিলেন ধীরেন্দ্রনাথ নামের একজন। কিন্তু মহাখালীর রাস্তা বন্ধ থাকায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন তিনি। ধীরেন্দ্রনাথ বলেন, মহাখালীর রাস্তা বন্ধ থাকায় অনেক দূর পর্যন্ত যানজট লেগে আছে। যে কারণে বাধ্য হয়ে রেডিসন ব্লুর সামনে থেকে হেঁটে মহাখালী পর্যন্ত এলাম অসুস্থ স্ত্রীকে নিয়ে। এখন জাহাঙ্গীর গেট পর্যন্ত গিয়ে যদি কোনো যানবাহন পাই, তাহলে পঙ্গু হাসপাতালে যাব। রিকশা চালকরা রাস্তা বন্ধ করে আন্দোলন করার কারণে হাজার হাজার মানুষ চরম ভোগান্তিতে পড়েছে।

নতুন বাজার থেকে ছেড়ে আসা বৈশাখি বাসের চালক আব্দুল আলিম বলেন, সাড়ে চার ঘণ্টা ধরে মহাখালীর কাঁচাবাজারের সামনে আটকা আছি। সামনেও যেতে পারছি না, পেছনেও ঘোরাতে পারছি না। যাত্রীরা সব নেমে গেলেও ফাঁকা বাস নিয়েই এখানে বসে আছি। রিকশা চালকরা আন্দোলন করছে রাস্তা বন্ধ করে, যে কারণে মহাখালী থেকে চারিদিকে বিশাল যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। সব দিকের রাস্তা স্থবির হয়ে আছে। আমাদের সারাদিনের ব্যবসাই শেষ। অনেক টাকা জমা খরচ দিয়ে বাস বের করতে হয়, কিন্তু আজ সারাদিন এখানেই আটকে থাকতে হলো। হাজার হাজার মানুষ পায়ে হেঁটে রাস্তাগুলো দিয়ে হেঁটে যাচ্ছে।

ফার্মগেট থেকে মহাখালী পর্যন্ত হেঁটে আসা পথচারী সাজেদুল ইসলাম বলেন, কয়েক ঘণ্টা যানজটে বসেছিলাম, পরে বাধ্য হয়ে হাঁটতে শুরু করেছি। ফার্মগেট থেকে মহাখালী পর্যন্ত এলাম। আমার ছোট ভাই বিদেশ থেকে এয়ারপোর্টে এসে নামবে, সে কারণেই বাধ্য হয়ে এয়ারপোর্টের দিকে হাঁটতে শুরু করেছি। রিকশা চালকদের আন্দোলনে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় খুব ভোড়ান্তিতে পড়েছে সাধারণ মানুষ। যাদের কাজ আছে তারা মাইলের পর মাইলে হেঁটে যাচ্ছে। এমন সব ভোগান্তি থেকে আমরা অবসান চাই।

এদিকে রাস্তা আটকে মহাখালীতে অবস্থান নেওয়া মাসুদ রানা নামের ব্যাটারিচালিত এক রিকশা চালক বলেন, আমরা আমাদের দাবি আদায়ে রাজপথে অবস্থান নিয়েছি। আমাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা রাস্তা ছাড়ব না। আমাদের বিষয়ও তো ভাবতে হবে। আমাদের জীবিকা নষ্ট হয়ে যাবে, আমরা কর্মহীন হয়ে যাব, এটা তো মেনে নেওয়া যায় না। তাই আমরা বাধ্য হয়ে দাবি আদায়ে রাস্তায় নেমেছি। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা সড়ক ছাড়ব না।

About somoyer kagoj

Check Also

প্রকৃতিকে ধ্বংস করে উন্নয়ন হলে সে উন্নয়ন টেকসই হবে না: রিজওয়ানা হাসান

নিজস্ব প্রতিবেদক: পানি সম্পদ এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *