Thursday , January 16 2025

হতাশার বোলিংয়ের পর ব্যাটিংয়েও চাপে বাংলাদেশ

স্পোর্টস ডেস্ক:

কেশভ মহারাজের বলটা ঠেকিয়ে দিলেন নাজমুল হোসেন শান্ত। স্টাম্পের বেল ফেলে দিনশেষ হওয়ার ঘোষণা দিলেন আম্পায়াররা।

বাংলাদেশ দল হয়তো পেল বড় স্বস্তি! অবশ্য এটার সুযোগও খুব বেশি নেই তাদের সামনে। বোলারদের হতাশায় মোড়ানো সময়ের পর ব্যাটাররা ফেলে দিয়েছেন আরও চাপে। চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজের শেষটিতে মুখোমুখি হয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা ও বাংলাদেশ। প্রথম ইনিংসে ৬ উইকেট হারিয়ে ৫৭৫ রান করে ইনিংস ঘোষণা করে প্রোটিয়ারা। দ্বিতীয় দিনের শেষ বিকেলে খেলতে নামা স্বাগতিকরা ৩৮ রান তুলতেই চার উইকেট হারিয়ে ফেলেছে।

হতাশায় মোড়ানো প্রথম দিন কাটানোর পর বাংলাদেশের সামনে দ্বিতীয় দিনে ছিল নতুন আশা খুঁজে বের করার চ্যালেঞ্জ। প্রথম সেশন শেষে একটু হলেও সেটি পাওয়া গেছে। অবশ্য প্রথম ঘণ্টা ছিল আগের মতোই। দ্বিতীয় দিনের প্রথম ১৫ ওভারে ৫৯ রান তোলে প্রোটিয়ারা, বাংলাদেশের বোলাররাও তৈরি করতে পারেননি সুযোগ।

এর মধ্যেই জুটিতে পঞ্চাশ পার করেন ডেভিড বেডিংহ্যাম ও টনি ডি জর্জি। ব্যক্তিগত হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন বেডিংহ্যাম, আগের দিনই সেঞ্চুরি ছুয়ে ফেলা জর্জি করেন দেড়শ। শুরুর দিকে একবার হাসান মাহমুদের বলে আম্পায়ার আঙুল তুললেও রিভিউ নিয়ে বাঁচেন বেডিংহ্যাম।

বাংলাদেশের জন্য হতাশা যখন শুধুই বাড়ছিল, তখনই ফের ত্রাতা হন তাইজুল ইসলাম। আগের দিনের দুটি উইকেটও নিয়েছিলেন তিনি, দ্বিতীয় দিনের প্রথম সেশনেই আরও তিন উইকেট নিয়ে পূরণ করেছেন ফাইফার। এ নিয়ে টেস্টের এক ইনিংসে ১৪তম বারের মতো পাঁচ উইকেট পেলেন তাইজুল। বাংলাদেশিদের মধ্যে সর্বোচ্চ ১৯ বার এই কীর্তি ছিল সাকিব আল হাসানের।

তার উইকেট নেওয়ার শুরুটা হয় বেডিংহ্যামকে দিয়ে। তাইজুলকে ওভারের প্রথম বলে ছক্কা হাঁকানোর পর দ্বিতীয়টিতেও চালিয়ে খেলতে যান তিনি। কিন্তু বল আঘাত হানে বেডিংহ্যামের স্টাম্পে। ৭৮ বলে ৫৯ রান করে বেডিংহ্যামকে সাজঘরে ফিরতে হয়।

পরের ওভারের শেষ বলে তাইজুল ফেরান বহুল আকাঙ্ক্ষিত টনি ডি জর্জিকে। ইনিংস উদ্বোধনে নামা এই ব্যাটারকে দুইশর দিকে তেমন এগোতে দেননি তিনি। ২৬৯ বলের ইনিংসে ১৭৭ রান করে তার বলে এলবিডব্লিউ হন জর্জি। রিভিউ নিলেও বাঁচতে পারেননি।

টানা তৃতীয় ওভারে এসে উইকেট তুলে নেন তাইজুল। এবার ফেরান কাইল ভেরাইনকে। সুইপ করতে গেলে ঠিকঠাক খেলতে পারেননি, বল লাগে তার শরীরে। আম্পায়ার এলবিডব্লিউ আউট দিলে রিভিউ নেন ভেরাইনেও, কিন্তু কাজ হয়নি। শূন্য রানে প্রোটিয়া ব্যাটার ফিরলে তাইজুলের ফাইফার পূর্ণ হয়।

দ্বিতীয় দিনের প্রথম সেশনে ২৯ ওভারে ১০৬ রান তোলে প্রোটিয়ারা। মধ্যাহ্নভোজের বিরতির পরই সাফল্য এনে দেন নাহিদ রানা। প্রথমবার কোনো পেসার এনে দেন সাফল্য, আগের পাঁচ উইকেটের সবগুলোই ছিল তাইজুলের।

১২ রান করে রিকটেলটন তার বলে উইকেটরক্ষক মাহিদুল ইসলাম অঙ্কনের হাতে ক্যাচ দেন। প্রথম দিন বাজে কাটানোর পর দ্বিতীয় দিনে এসে প্রথম ডিসমিশাল যোগ হয় অভিষিক্ত অঙ্কনের নামের পাশে। সেশনের শুরুতেই সাফল্য পেলেও পরের সময় আর ভালো কাটেনি।

হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন মুল্ডার। তার সঙ্গে সেনুরান মুতোসামির জুটিও বড় হয় ধীরে ধীরে। এই জুুটি আর শেষ পর্যন্ত ভাঙতে পারেনি বাংলাদেশ। ১৮৬ বলে ১৫২ রানের জুটি ছিল তাদের। তাইজুলকে ছক্কা হাঁকিয়ে মুল্ডার সেঞ্চুরি পূর্ণ করলে ইনিংস ঘোষণা করে দক্ষিণ আফ্রিকা।

বোলারদের হতাশায় মোড়ানো সময়ের পর ব্যাটাররা স্বস্তি তো দিতেই পারেননি, উল্টো তাদের পারফরম্যান্সে চোখ রাঙানি দিচ্ছে বড় হারের শঙ্কা। শেষ বিকেলে ব্যাট করতে নেমে চার উইকেট হারিয়ে ফেলেছে স্বাগতিকরা।

ইনিংসের প্রথম ওভারে সাদমান ইসলামকে দিয়ে শুরু হয় বিপদের। ৬ বলে শূন্য রান করে কাগিসো রাবাদার বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন সাদমান। এরপর উইকেটে আসেন জাকির হাসান।

তার ব্যাটে রান না থাকায় প্রথম ম্যাচে ছিলেন না। এরপর জাতীয় লিগেও রান পাননি। তবে ওই ম্যাচের পরদিনই তাকে নামানো হয় চট্টগ্রাম টেস্টে। যথারীতি সুবিধা করতে পারেননি তিনি। রাবাদার বলেই উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন তিনি।

৮ বলে ২ রান করে আউট হওয়া এই ব্যাটার রিভিউ নেন তবুও। রিপ্লেতে দেখা যায়, বেশ বড় স্পাইক ছিল তার ব্যাটে। তার বিদায়ের পর আরেক ওপেনার মাহমুদুল হাসান জয়ও সাজঘরের পথ ধরেন। ডেন পিটারসনের বলে স্লিপে মার্করামের হাতে ক্যাচ দেন।

About somoyer kagoj

Check Also

সিনিয়রদের অনুপস্থিতি তরুণদের মেলে ধরার সুযোগ: মিরাজ

স্পোর্টস ডেস্ক:২০০৯ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথমবার টেস্ট সিরিজ জিতেছিল বাংলাদেশ। মাশরাফি বিন মর্তুজার নেতৃত্বে …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *