Saturday , January 18 2025

গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্যবাহী লাঠিখেলা দেখতে হাজার হাজার মানুষের ঢল

শৈলকুপা প্রতিনিধি:

বাদ্য-বাজনার তালে তালে লাঠি নিয়ে একজন আরেকজনকে আঘাত করার চেষ্টা করছেন। লাঠির আঘাত থেকে বাঁচতে চলছে আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণ। না, কোনো ঝগড়া-বিবাদ নয়। চলছে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী লাঠিখেলা।

ঝিনাইদহ জেলার শৈলকুপা পৌর বিএনপির সভাপতি আবু তালেব মিঞার সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় কৃষকদলের সহ-সাধারণ সম্পাদক ও জেলা কৃষকদলের আহ্বায়ক মো. উসমান আলী বিশ্বাস।

ঝিনাইদহ জেলা কৃষক দলের আহ্বায়ক মোঃ ওসমান আলী বিশ্বাস বলেন, গত ১৭ বছরে ফ্যাসিস সরকার শেখ হাসিনার আমলে কোন ধরনের, খেলাধুলা, সাংস্কৃতিক ও ইচ্ছামত কথা বলতে পারে নাই গ্রামবাংলার মানুষ। তবে ছাত্র গণঅভ্যুত্থানে পরাজিত হয়ে গত ৫ আগস্ট পালিয়ে ভারতে যান হাসিনা। কিন্তু আমরা সব সময় থেকে মাদক, জুয়া সন্ত্রাস, অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার থেকে আসছি। আমার নেতা বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান কৃষক ও মেহনতি মানুষের পাশে থাকতেন। তাই প্রেক্ষাপটে গ্রামের কৃষক ও খেটে খাওয়া মানুষদের কিছুটা বিনোদন আর হারানো ঐতিহ্য ধরে রাখতেই এই আয়োজন করা হয়েছে। বিশেষ অতিথি ছিলেন, শৈলকুপা পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সেলিম রেজা ঠান্টু, পৌর বিএনপির সহ-সভাপতি মিজানুর রহমান বাবলু, জেলা কৃষক দলের সদস্য সচিব হাফিজুর রহমান। এসময় উপস্থিত ছিলেন, সাবেক কাউন্সিলর নবজেল হোসেন, পৌর যুবদলের যুগ্ন আহবায়ক ইমরান হোসেন,সাবেক পৌর কাউন্সিলর সবুর খান,সাবেক পৌর কাউন্সিলর হান্নান শেখসহ স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মী ও সাধারণ জনগণ।

বুধবার বিকেলে শৈলকুপা পৌরসভার সাতগাছী গ্রামের ঝিনাইদহ জেলা ছাত্র দলের যুগ্ন আহবায়ক আব্দুল আলিম এর বাড়ীর ওঠানে অনুষ্ঠিত হয় ঐতিহ্যবাহী এই খেলা। সাতগাছী গ্রামে পুরাতন পাড়ায় গিয়ে দেখা যায়, দুপুরের পর থেকেই লাঠি খেলা দেখতে দূর-দুরান্ত থেকে ছুটে আসেন নানা বয়সী মানুষ। ঢাক, ঢোল আর কাঁসার ঘণ্টার শব্দে চারপাশে সৃষ্টি হয় উৎসব মুখর পরিবেশের। প্রথমে বাদ্যের তালে তালে নানা অঙ্গভঙ্গি দেখান লাঠিয়ালরা। এরপরই শুরু হয় মূল আকর্ষণ। দুইজন লাঠিয়াল শব্দের তালে তালে ঝাপিয়ে পড়েন একে অপরের ওপর। আর নিজেকে রক্ষা করে পাল্টা আঘাত করার সুযোগ ছাড়েন না অপরজন। এসব দেখে আনন্দে ওঠেন দর্শকরা। রাজ্জাক নামে এক দর্শক বলেন, অনেক দিন পর লাঠিখেলা দেখছি। আমার খুব ভালো লাগছে। মুরুব্বিরা খেলছেন, দেখতে খুব ভালো লাগছে। প্রত্যেক বছর যদি এভাবে খেলা হয় তাহলে আমরা দেখতে পারি। দর্শক বিউটি খাতুন বলেন, আমি লাঠিখেলার কথা শুনেছিলাম। আজ প্রথম দেখলাম। গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য যে কত সুন্দর তা না দেখলে বোঝানো যাবে না। লাঠিখেলা খুবই উপভোগ করছি। খুবই ভালো লাগছে। সালমা নামে একজন বলেন, অনেক বছর পর এমন আয়োজন করা হয়েছে। এ জন্য আয়োজকদের ধন্যবাদ জানাই।

লাঠি খেলোয়াড়রা জানান, তারা বিভিন্ন জায়গায় লাঠি খেলার প্রদর্শনী করে থাকেন। এ খেলার মাধ্যমে লোকদের যেমন আনন্দ দেন তেমনি নিজেরাও আনন্দ পান। কিন্তু এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় গিয়ে লাঠি খেলার আয়োজন করা হলে তাদের অনেক লোকসান হয়। তাই লাঠিখেলাকে আরও জনপ্রিয় করে তুলতে সরকারি সহায়তার দাবি জানান তারা। তারা মনে করেন এতে মানুষকে আনন্দ দেওয়ার পাশাপাশি গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য ধরে রাখা সম্ভব হতো।

About somoyer kagoj

Check Also

সন্ধান দিন

ছবির এই ছেলেটি হারিয়ে গেছে। তার নাম রায়হান হোসেন রিজভী, বয়স ১২ বছর। সে কুষ্টিয়ার …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *