Monday , April 21 2025

লেবাননে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষীদের ওয়াচ টাওয়ারে ইসরায়েলের গোলাবর্ষণ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

লেবাননে হামলা অব্যাহত রেখেছে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী। বিমান হামলার পাশাপাশি তারা স্থলপথেও হামলা চালাচ্ছে। ইসরায়েলের হামলা থেকে বাদ যাচ্ছেন না দেশটিতে নিযুক্ত জাতিসংঘের শান্তিরক্ষীরাও।

পৃথক হামলায় ইতোমধ্যেই বেশ কয়েকজন শান্তিরক্ষী আহত হয়েছেন। এমন অবস্থায় আবারও ইসরায়েলি হামলার শিকার হয়েছেন শান্তিরক্ষীরা। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী শান্তিরক্ষীদের অবস্থান লক্ষ্য করে গোলাবর্ষণ করেছে।

এতে শান্তিরক্ষীদের একটি ওয়াচ টাওয়ার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।

দক্ষিণ লেবাননে মোতায়েন থাকা জাতিসংঘ শান্তিরক্ষীরা বলেছেন, ইসরায়েলি বাহিনী দক্ষিণাঞ্চলে তাদের একটি অবস্থানে “সরাসরি এবং স্পষ্টতই ইচ্ছাকৃতভাবে” গোলাবর্ষণ করে আক্রমণ করেছে। এতে একটি ওয়াচ টাওয়ার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

লেবাননে নিয়োজিত জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশন ইউনাইটেড নেশনস ইন্টারিম ফোর্স ইন লেবানন (ইউনিফিল) বুধবার বলেছে, তার শান্তিরক্ষীরা দক্ষিণ লেবাননের কাফার কিলার কাছে ইসরায়েলি মেরকাভা ট্যাংক থেকে “তাদের ওয়াচটাওয়ারে গুলি চালাতে দেখেছে”। এই হামলায় “দুটি ক্যামেরা ধ্বংস হয়ে গেছে এবং টাওয়ারটিও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে”।

হামলার এই ঘটনাটি লেবাননে শান্তিরক্ষীদের বিরুদ্ধে ধারাবাহিক ইসরায়েলি আক্রমণ এবং লঙ্ঘনের সর্বশেষতম ঘটনা।

এর আগে গত রোববার ইউনিফিল জানায়, ইসরায়েলি সৈন্যরা দুটি ট্যাংকসহ ইসরায়েল ও লেবাননের মধ্যকার ডি ফ্যাক্টো সীমান্ত জাতিসংঘ-নির্দেশিত ব্লু লাইন অতিক্রম করে রামিয়াহ গ্রামের কাছে ইউনিফিল অবস্থানে “জোরপূর্বক প্রবেশ করে”। পরে ইসরায়েলি সৈন্যরা শান্তিরক্ষীদের কাছে বিস্ফোরক নিক্ষেপ করে। এতে ১৫ জন কর্মী ত্বকে জ্বালাপোড়া এবং গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল সমস্যায় পড়েন।

ইউনিফিল আরও জানিয়েছে, গত শনিবার ইসরায়েলি সেনারা মেইস আল-জাবালের কাছে গুরুত্বপূর্ণ লজিস্টিক চলাচলে বাধা দিয়েছে।

শান্তিরক্ষা মিশন বলেছে, “আমরা আইডিএফ এবং সমস্ত দায়িত্বশীলদের জাতিসংঘের কর্মী এবং সম্পত্তির নিরাপত্তা ও সুরক্ষা নিশ্চিত করতে এবং সর্বদা জাতিসংঘ প্রাঙ্গণের অলঙ্ঘনীয়তাকে সম্মান করার জন্য তাদের বাধ্যবাধকতার কথা মনে করিয়ে দিচ্ছি।”

প্রসঙ্গত, ইসরায়েল ১৯৭৮ সালে আক্রমণের পর লেবাননের দক্ষিণাঞ্চল থেকে ইসরায়েলি সৈন্যদের প্রত্যাহার করা হয়েছে কিনা তা তদারকি করতে ইউনিফিল গঠন করা হয়েছিল। ইউনিফিলে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ১০ হাজারের বেশি শান্তিরক্ষী রয়েছেন।

ইসরায়েল ও হিজবুল্লাহর মধ্যে ২০০৬ সালের যুদ্ধের পর জাতিসংঘ তাদের মিশন সম্প্রসারিত করে এবং সীমান্ত বরাবর তৈরি করা ‘বাফার জোনে’ টহলদারি করতে শান্তিরক্ষীদের অনুমতি দেওয়া হয়।

ইসরায়েলের অভিযোগ, ২০০৬ সালের যুদ্ধ বন্ধ করতে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ যে প্রস্তাব দিয়েছিল তা লঙ্ঘন করে সীমান্ত বরাবর সন্ত্রাসী অবকাঠামো নির্মাণ করছে হিজবুল্লাহ।

জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা বিষয়ক প্রধান জাঁ-পিয়ের লাক্রোয়া গত সপ্তাহে বলেন, লেবাননের দক্ষিণ সীমান্তে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষীরা তাদের অবস্থানে নিয়োজিত থাকবে। মূলত হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে স্থল অভিযান শুরুর আগে ইসরায়েল কিছু এলাকা খালি করার অনুরোধ করা সত্ত্বেও ইউনিফিল এই সিদ্ধান্ত নেয়।

About somoyer kagoj

Check Also

ইউক্রেনে পুতিনের যুদ্ধবিরতি ঘোষণা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: খ্রিষ্টানদের ধর্মীয় উৎসব ইস্টার সানডে উপলক্ষ্যে ইউক্রেনে যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *