ফটিকছড়ি প্রতিনিধি:
দেশ-বিদেশের লাখো ভক্তের আমিন-আমিন ধ্বনিতে গতকাল শনিবার শেষ হলো মাইজভান্ডারী সূফিবাদি দর্শনের দ্বিতীয় প্রাণ পুরুষ শাহ্সূফী সৈয়দ গোলামুর রহমান বাবাভান্ডারী (ক.)’র ১৬১তম খোশরোজ শরীফ। এ উপলক্ষ্যে মাইজভান্ডারের বিভিন্ন মঞ্জিলে যথাযত ধর্মীয় ভাবগাম্বীর্যে বিশ্ব শান্তি-ঐক্য কামনায় মুনাজাত হয়েছে।
জানা গেছে, গত দু’দিন ধরে দেশের নানা প্রান্ত থেকে ছুটে আসা ভক্ত জনতার পদচারণায় মুখরিত হয়ে ওঠে মাইজভাণ্ডার শরীফ। বাবাভান্ডারীর রওজা শরিফকে ঘিরে জিয়ারত, কুরআন তিলাওয়াত, দুরূদ শরিফ পাঠ, মিলাদ-কিয়াম ও মুনাজাতে শামিল হয় ভক্ত আশেকরা। গতকাল বাদে জোহর বাবাভান্ডারী সৈয়দ গোলামুর রহমান মাইজভান্ডারী জীবনাদর্শ আলোচনা সভায় গাউছিয়া রহমান মঞ্জিলের সাজ্জাদানশীন সৈয়দ মুজিবুল বশল মাউজভান্ডারী (ম.জি.আ) বলেছেন, বিশ্বব্যাপী সাম্য, মৈত্রী, ভ্রাতৃত্ব ও ইনসাফের অমিয়ধারা একমাত্র নির্মোহ, নৈর্ব্যক্তিক ও প্রেমময় আধ্যাত্মিকতাই দিতে পারে- যা মাইজভান্ডারী দর্শনে বিধৃত হয়েছে। মানবের দায়িত্ব, নৈতিকতা ও মহাত্মতা সৃষ্টিতে এই দর্শনের অবদান অপরিসীম। মাইজভান্ডার শরিফের মধ্যমণি হযরত মাওলানা সৈয়দ আহমদ উল্লাহ মাইজভান্ডারী (ক.) এবং বাবা ভান্ডারী সৈয়দ গোলামুর রহমান (র.) আধ্যাত্মিক সাধনায় ছিলেন সিদ্ধপুরুষ বা কামেল অলীআল্লাহ্।
এঁদের আধ্যাত্মিক সাধনার মহিমায় কালক্রমে মাইজভান্ডারকে উন্নীত করেছে মাইজভান্ডার শরীফে। এখানে এসে হাজার হাজার ভক্ত নিজেদের আধ্যাত্মিক ক্ষুধা আর তৃষ্ণা নিবারণ করে। নর-নারী জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে মাইজভান্ডার আজ অগন্য ভক্তের মিলনকেন্দ্র, এক মহাতীর্থভূমি।
ইসলামে মারাফত বা আধ্যাত্মিক সাধনার বহু তরিকা রয়েছে। মাইজভান্ডার শরীফে যে তরিকা অনুসৃত হয় তার মূলকথা প্রেম ও ভক্তির। তাই কোনোরকম জাতি ধর্ম বর্ণ ভেদাভেদ নেই এখানে। এখানে সবাই প্রেম ভক্তি পথের পথিক; সবাই এক ও সবাই সমান। মাইজভান্ডার প্রেম ও ভক্তিমার্গের এক অপূর্ব সমন্বয়ক্ষেত্র।
তিনি আরো বলেন, নামাজ, রোজা, হজ্ব, যাকাত আদায় করে হক হালাল ভাবে জীবন পরিচালনা করাই মুমিন মুসলমানের কাজ। মিথ্যা, গীবত, জেনার কারনে মানুষ ধ্বংস হয়ে যায়। শয়তান মানুষকে ধোকা দেওয়ার চেষ্টায় মুহুর্তে মুহুর্তে লিপ্ত, তাই শয়তানের প্রলোভন থেকে দুরে থেকে নামাজ, এবাদত বন্দেগী, দরুদ শরিফ, যিকিরের মাধ্যমে আমাদের আমল বাড়াতে হবে। যা মাইজভান্ডারী তরিকা ও সৈয়দ গোলামুর রহমান বাবা ভান্ডারীর শিক্ষা।
এ সময় শাহজাদা সৈয়দ নুরুল বশর মাইজভান্ডারী, আশেকানে মাইজভান্ডারী এসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি আ ফ ম জামাল, প্রফেসর শায়েস্তা খান, মাওলানা জাগির হোসেন, জামাল উদ্দিন, আবদুছ ছালাম সরকার, এম হাসেম ও কামালউদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।
ফটিকছড়ির মাইজভান্ডার শরীফে সৈয়দ গোলামুর রহমান বাবা ভান্ডারীর ১৬২তম খোশরোজ শরীফে লাখো ভক্তের মাঝে বক্তব্য রাখছেন সৈয়দ মুজিবুল বশর মাইজভান্ডারী (ম.জি.আ)।