Saturday , May 17 2025

সহিংসতা: রাঙামাটি ও খাগড়াছড়িতে ১৪৪ ধারা জারি

নিজস্ব প্রতিনিধি:

সহিংসতার জেরে উত্তপ্ত পার্বত্য অঞ্চলের দুই জেলা রাঙামাটি ও খাগড়াছড়ি। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে এ দুই জেলায় আজ ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে।

খাগড়াছড়ির সদর উপজেলায় বেলা ২টা থেকে ১৪৪ ধারা জারির নোটিশ জারি করেছে প্রশাসন। সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুজন চন্দ্র রায় স্বাক্ষরিত আদেশে আজ রাত ৯টা পর্যন্ত ১৪৪ ধারা বলবৎ থাকার কথা বলা হয়েছে।

একইভাবে রাঙামাটি পৌর এলাকায় বেলা একটা থেকে ১৪৪ ধারা জারি করে গণবিজ্ঞপ্তি দিয়েছেন জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খান।

মূলত, খাগড়াছড়ির দিঘীনালায় পাহাড়ি-বাঙালি সংঘর্ষের জেরে উত্তপ্ত হয়েছে রাঙামাটি শহর। খাগড়াছড়ির ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাঙামাটিতে আজ শুক্রবার সকাল থেকে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ, দোকানপাট ও বাড়িঘরে ভাঙচুর এবং অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। এতে আহত হয়েছেন অন্তত ২০ জন।

স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানায়, আজ শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে জেলা শহরে শত শত পাহাড়ি জনতা মিছিল বের করে। সেই মিছিল থেকে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে বনরূপা এলাকার দোকানপাট ও স্থাপনায় ভাঙচুর চালানো হয়। পুড়িয়ে দেওয়া হয় রাস্তায় থাকা অটোরিকশা ও মোটরসাইকেল। এ ঘটনায় পাঁচজন আহত হন। এর ঘণ্টাখানেক পর সাধারণ জনগণ ও ব্যবসায়ীরা তাদের প্রতিহত করার চেষ্টা চালান।

এরপর দুপুর ১২টার দিকে পাহাড়িরা শহরের রাজবাড়ি এলাকায় গাড়ি ভাঙচুর করেন। হাসপাতাল এলাকা ও কালিন্দিপুর এলাকায়ও হামলার ঘটনা ঘটে। এক পর্যায়ে সংঘর্ষ বেঁধে যায়। উভয়পক্ষ পাল্টাপাল্টি হামলা ও ভাঙচুর চালায়। এতে উভয়পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হন।

রাঙামাটি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খান বলেছেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে কাজ করছি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিতে সড়কে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অবস্থান নিয়েছে।

এর আগে, খাগড়াছড়ি সদরে বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) চুরির অভিযোগে মো. মামুন নামে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যার প্রতিবাদে পরদিন বৃহস্পতিবার বিকেলে দীঘিনালায় বাঙালি শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করেন। এ নিয়ে দুপক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এসময় লারমা স্কয়ারের বাজারে আগুন লাগিয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা। তাতে ৫০টির বেশি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পুড়ে যায়। আহত হন পাঁচজন।

এদিন রাতে সাড়ে ১০টায় খাগড়াছড়ি জেলা শহরের নারানখাইয়া স্বনির্ভর এলাকায় ব্যাপক গুলির শব্দ শোনা যায়। পুরো এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

এরপর রাতেই ১২ জনকে খাগড়াছড়ি জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। এরমধ্যে রুবেল (৩০), জুনান চাকমা (২০) ও ধনঞ্জয় চাকমা (৫০) নামে তিনজন মারা যান।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে জেলার বিভিন্ন স্থানে সেনাবাহিনীসহ আইন শৃঙ্খলাবাহিনীর টহল জোরদার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক মো. সহিদুজ্জামান।

শুক্রবার সকালে জেলা প্রশাসক মো. শহীদুজ্জামান, দীঘিনালা সেনা জোনের অধিনায়ক লেফটেনেন্ট কর্নেল ওমর ও পুলিশ সুপার আরিফিন জুয়েল দীঘিনালার ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেন। এ সময় তারা স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলেন এবং ঘটনার উদ্‌ঘাটনে তদন্ত কমিটি গঠনসহ দোষী ব্যক্তিদের আইনের আওতায় এনে বিচারের আশ্বাস দেন।

About somoyer kagoj

Check Also

ঐতিহ্যের ধারক বিপুলাসার ইউনিয়নের কৃতি সন্তান অধ্যাপক সরওয়ার জাহান ভুঁইয়া দোলনকে কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির কমিটিতে যুগ্ম আহবায়ক মনোনীত করায় লাকসাম -মনোহরগঞ্জ বিএনপিতে প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে এসেছে

মো: আব্দুল্লাহ আল মামুন, (লাকসাম -মনোহরগঞ্জ), কুমিল্লা প্রতিনিধি: কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহবায়ক জাকারিয়া তাহের …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *