Saturday , May 17 2025

লক্ষ্মীপুরে চেয়ারম্যানের উসকানিতে শিক্ষার্থীদের ধাওয়া করে পিটুনি

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি:

লক্ষ্মীপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীদের সঙ্গে যুবলীগ-ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়া ও ইটপাটকেল ছোড়াছুড়ির ঘটনা ঘটেছে। পরে যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ধাওয়া করে লাঠিসোঁটা দিয়ে কয়েকজন শিক্ষার্থীকে পিটিয়েছেন। এতে প্রায় ১০ জন আহত হয়েছেন। তবে তাৎক্ষণিক কারও নাম পরিচয় জানা যায়নি।

শুক্রবার (২ আগস্ট) দুপুর ২টার দিকে তমিজ মার্কেট এলাকায় সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান একেএম সালাহ উদ্দিন টিপুর বাসার সামনে এ ঘটনা ঘটে।

পুলিশ ও মুসল্লিদের দাবি, জুমার নামাজের পরপরই উপজেলা চেয়ারম্যান টিপুর উসকানিমূলক আচরণে ঘটনাটি ঘটেছে। শান্ত লক্ষ্মীপুরকে অশান্ত করার পাঁয়তারা করা হয়েছে।

চকবাজার জামে মসজিদের মুসল্লিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, উপজেলা চেয়ারম্যান টিপু চক বাজার জামে মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে কেন্দ্র করে তিনি নেতাকর্মীদের নিয়ে নামাজ পড়তে আসেন। নামাজ শেষেই তিনি নেতাকর্মীদের নিয়ে বের হয়ে মুসল্লিদের সঙ্গে মারমুখী আচরণ করে দ্রুত বাসায় যাওয়ার জন্য বলেন। এ সময় তার সঙ্গে থাকা যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা মারমুখী ছিলেন। তারা মসজিদের সামনে থেকে বাজারের বিভিন্ন সড়কে স্লোগান দিয়ে সাধারণ মুসল্লি ও শিক্ষার্থীদের ধাওয়া করেন। পরে তারা মিছিল নিয়ে তমিজ মার্কেট এলাকায় টিপুর বাসার ভেতরে অবস্থান নেন। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) হাসান মোস্তফা স্বপনের নেতৃত্বে কয়েকজন পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে তাদেরকে নিরাপদে রাখতে সেখানে অবস্থান নেন।

এদিকে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মিছিল শেষেই কোটা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারীরা বাজার ব্রিজ থেকে মিছিল নিয়ে বের হন। মিছিলটি চকবাজার মসজিদের সামনে গেলেই শিক্ষার্থীরা ভুয়া ভুয়া স্লোগান শুরু করেন। উপজেলা চেয়ারম্যানের বাসার সামনে গেলে মিছিল থেকে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ওপর ইটপাটকেল ছুড়ে মারে। এতে পুলিশের বাধা ভেঙে লাঠিসোঁটা নিয়ে শিক্ষার্থীদের ধাওয়া করেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। তারা শিক্ষার্থীদের ওপর ইটপাটকেল ছোড়ে। এর মধ্যে ৭-৮ শিক্ষার্থীকে লাঠিসোঁটা দিয়ে পিটিয়ে আহত করা হয়। শিক্ষার্থীদের ছোড়া ইটপাটকেলে ছাত্রলীগের দুইজন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।

এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান একেএম সালাহ উদ্দিন টিপুর মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি। টিপু জেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) হাসান মোস্তফা স্বপন বলেন, লক্ষ্মীপুরে সম্পূর্ণ আমাদের নিয়ন্ত্রণে সবাই। লক্ষ্মীপুরকে সুন্দরভাবে নিয়ন্ত্রণে রেখেছি।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) এবি ছিদ্দিক বলেন, লক্ষ্মীপুর শান্ত ছিল। সম্পুর্ণ আমাদের নিয়ন্ত্রণে ছিল। চেয়ারম্যানের উসকানিতেই ঘটনাটি ঘটেছে। উনি নেতাকর্মীদের নিয়ে এখানে অবস্থান না নিলে ইট মারার পরিস্থিতি হতো না। আমাদের উপস্থিতিতে তারা এখানে অবস্থান নেবে কেন? আমরা যদি আওয়ামী লীগের লোকজনকে ভেতরে না রাখতাম তাহলে লক্ষ্মীপুরে আগুন হয়ে যেত।

About somoyer kagoj

Check Also

বিশ্বকবির ১৬৪তম জন্মজয়ন্তীর মূল অনুষ্ঠান শিলাইদহের কুঠিবাড়িতে

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি: কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬৪তম জন্মবার্ষিকী আজ বৃহস্পতিবার (৮ মে)। ১২৬৮ বঙ্গাব্দের ২৫ বৈশাখ …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *