মোঃ তারিকুল ইসলাম, হোমনা প্রতিনিধি:
কুমিল্লা জেলার হোমনা উপজেলায় সাপের কামড়ে তানজিনা আক্তার(২১) নামে এক গৃহবধুর মৃত্যু হয়েছে। তিনি হোমনা উপজেলার গোয়ারি ভাঙ্গা গ্রামের আলী আহমেদের স্ত্রী এবং দুই সন্তানের জননী।
বুধবার (২৬ জুন) সকালে তাদের নিজ বাড়িতে বিছানায় শুয়ে থাকা অবস্থায় তানজিনা আক্তারকে সাপে কাটে। তবে সাপটিক কোন প্রজাতির তা জানাতে পারেনি কেউ। সকাল ৮ টার দিকে তাকে হোমনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে তাকে আধুনিক চিকিৎসা (এন্টিভেনম) দেয়ার পর হাসপাতালে ভর্তি থাকার পরামর্শ দেয়া হয়। কিন্তু তার পরিবার সেটি না মেনে তাকে এক কবিরাজের কাছে নিয়ে যায়। সেখানে রোগীর অবস্থা খারাপ হলে আবার হাসপাতালে আসার পথে তার মৃত্যু হয়।
তানজিনার স্বামী আলী আহমেদ জানান, সকাল আনুমানিক ৭ টায় বিছানাতেই শুয়েছিল তানজিনা। এ সময় তার বাম পায়ে আঙ্গুলে সাপের ছোবল টের পায়। খাটের নিচে তাকাতেই কালো রঙের একটি সাপকে চলে যেতে দেখে। পরে তার শারীরিক অবস্থা অবনতি হলে তাকে হোমনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভ্যাক্সিন দেওয়ার পর সেখান থেকে মাথাভাঙ্গা শাহআলম দরবেশ আলী কবিরাজের কাছে ‘পানপড়া’ খাওয়ানোর জন্য নিয়ে গেলে সেখান থেকে তানজিনাকে ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। ফেরার পথে তানজিনার শারীরিক অবস্থা আরো অবনতি ঘটলে তাকে আবার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়ার পথেই তার মৃত্যু হয়।
আলি আহমেদ জানান, কি সাপে কেটেছে বলতে পারছিনা। তবে সাপটি কালো রঙের ছিল। যাকে কালি ফানকনামে ডাকে।
হোমনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার রাশেদুল ইসলাম জানান, সাপে কাটা রোগীকে আধুনিক( অ্যান্টি ভেনম) দেয়া শুরু করা হয়েছিল। কিন্তু সেটি মাঝামাঝি পর্যায়ে থাকাকালীন সময়ে তার পরিবারের লোকজন তাকে এক কবিরাজের কাছে নিয়ে যায়। পরে শুনেছি তাকে মৃত অবস্থায় আবার হাসপাতালে আনা হয়েছে।
সাপটি কি প্রজাতির সেটি তিনি নিশ্চিত ভাবে বলতে না পারলেও তানজিনাকে কোন না কোন বিষধর সাপে কেটে ছিল বলে তিনি জানান।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট মো. সাইফুল ইসলাম জানান, তানজিনাকে যখন নিয়ে আসে হয় তখন তার শরীরে বিষক্রিয়ার বিভিন্ন উপসর্গ দেখা গেছে। তার চোখের পাতা বারবার পড়ে আসছিল এবং গলা শুকিয়ে আসছিল। চিকিৎসকরা তাকে এন্টিভেনম দেয়ার মাঝামাঝি সময়ে তার পরিবারের লোকজন তাকে কবিরাজের বাড়ি নিয়ে যায়। পরে আবার হাসপাতালে আনলে তাকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়।