Monday , April 21 2025

একদিনে রাতারগুল ও ভোলাগঞ্জের সাদা পাথর ভ্রমণ

নাঈম ইকবাল, চৌদ্দগ্রাম (কুমিল্লা) :

পাহাড়, ঝরনা আর সবুজের প্রাচুর্যে ভরা সিলেটে ছড়িয়ে আছে দৃষ্টিনন্দন সব পর্যটনকেন্দ্র। সবুজে মোড়া পাহাড়ের কোলঘেঁষা পাথুরে নদী, বন, ঝরনা, চা-বাগান কী নেই এখানে! সিলেটের বৈচিত্র্যে ভরা সৌন্দর্য দেখতে ছুটে আসেন পর্যটক আর ভ্রমণপ্রিয় মানুষ। তাই আমরা সাত জন সিদ্ধান্ত নিয়েছি, কুমিল্লার সনামধন্য ট্রাভেলস গ্রুপ ❝Travel Group Of Comilla – ভ্রমণ পিপাসু❞ এর সাথে সিলেট ভ্রমণে যাব। আমরা সাতজন, নাঈম ইকবাল, মাসুম খান নীল, এইচ এম তামজিদ, সাইফ উদ্দিন মিঠু, শাওন আহমেদ, সৌরভ হোসেন ও জাহিদ হাসান পাপ্পু। এছাড়া Travel Group Of Comilla – ভ্রমণ পিপাসু এর আরো অনেক সদস্য ছিল। ট্রুর হোস্ট ছিলেন সোহেল হোসেন ও আলমগীর হোসেন।

প্রথমেই দেখব মেঘ-পাথর-জল-পাহাড়ের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের সাদা পাথর। এরপর দেখব দেশের একমাত্র মিঠাপানির জলাবন রাতারগুল এবং হজরত শাহজালাল (রহ.) ও শাহপরানের (রহ.) মাজার।

সিলেটে জিন্দাবাজার এলাকায় খাবারের জন্য বেশ কয়েকটি ভালো মানের হোটেল রয়েছে। এর মধ্যে পাঁচ ভাই হোটেল ও পানসি হোটেল অন্যতম। তবে পাঁচ ভাই হোটেলে খাবারের মান খুবই ভালো এবং তুলনামূলকভাবে কম দাম। হরেক রকম ভর্তা, মাংস, মাছ, খিচুড়ি খুবই মজার। এদের পাঁচ মিশালি আইটেম দারুণ। তবে আমরা এইবার পানসিতে খেয়েছি।

২৩ তারিখ (বৃহস্পতিবার) রাত ১১ টায় আমরা কুমিল্লা শহরের ঈদগাঁ থেকে সিলেটের উদ্দেশ্যে রওনা হই এবং ২৪ তারিখ (শুক্রবার) রিয়েল কোচ (বাস) সকাল সাড়ে সাতটার আগেই সিলেটে পৌঁছে যায়। তারপর পানসি হোটেলে ফ্রেশ হয়ে,নাশতা করে, অল্প সময় রেস্ট নিয়ে রওনা হই ভোলাগঞ্জের সাদা পাথরের উদ্দেশে ❝ধলাই নদ পাড় হয়ে বালু পথ মাড়িয়ে সামনে এগোতেই চোখে পড়ে নিরেট পাথর রাজ্য। পাথর ছুঁয়ে ধেয়ে নামছে পাহাড়ের স্বচ্ছ জল। বিশাল এলাকাজুড়ে দুদিকে নিরেট পাথর রাজি আর মধ্যে স্বচ্ছ জল। মেঘালয় পাহাড়ের ওপর মেঘের আলিঙ্গন। এ যেন প্রকৃতির স্বর্গরাজ্য সাদা পাথর। সব মিলিয়ে অদ্ভুত এক সৌন্দর্যের ক্যানভাস। এটি সিলেটের কোম্পানিগঞ্জ উপজেলার ভোলাগঞ্জে অবস্থিত❞ আমরা ভোলাগঞ্জে পৌঁছে নৌকা ভাড়া করি ৮০০ টাকা দিয়ে (প্রতিটি নৌকা ৮০০ টাকা)। সাদা পাথর এলাকায় গিয়ে ডাব/তরমুজ/ফলের শরবত খাই। তখন দুপুর ১২টা। ঘণ্টাখানেক সেখানে আড্ডা দিই সবাই। এরপর জয় বাংলা হোটেলে (ভোলাগঞ্জেই এই হোটেল) গিয়ে দুপুরের খাবার খেয়ে কিছু সময় রেস্ট করে রওনা দিই রাতারগুলের উদ্দেশে।

❝রাতারগুল জলাবন বাংলাদেশের একমাত্র মিঠাপানির জলাবন এবং বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য, যা সিলেটের গোয়াইনঘাটে অবস্থিত। বনের আয়তন ৩,৩২৫.৬১ একর, আর এর মধ্যে ৫০৪ একর বনকে ১৯৭৩ সালে বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য হিসেবে ঘোষণা করা হয়। এটি পৃথিবীর মাত্র কয়েকটি জলাবনের মধ্যে অন্যতম একটি। এটি বন বিভাগের অধীনে সংরক্ষণ করা হয়েছে। এখানে সবচেয়ে বেশি জন্মায় করচ গাছ। বর্ষাকালে এই বন ২০–৩০ ফুট পানির নিচে নিমজ্জিত থাকে। বাকি সারা বছর, পানির উচ্চতা ১০ ফুটের মতো থাকে❞ আমাদের রাতারগুলে পৌঁছতে ৪ঃ৩০ টা বেজে যায়। রাতারগুলে গিয়ে নৌকা ভাড়া করতে হয়। রাতারগুলেও আমরা এক ঘণ্টা থাকি। এরপর সিলেটের উদ্দেশে রওনা দিই। রাত ৮টায় বের হয়ে যাই হজরত শাহজালালের (রহ.) মাজারে। সেখান থেকে বের হয়ে কয়েকটি মার্কেটে ঘোরাঘুরি করে পানসি হোটেলে ফিরে যাই। ফ্রেশ হয়ে রাতের খাবার খেয়ে কিছু সময় রেস্ট করে ২৪ তারিখ (শুক্রবার) রাত ১১টায় আমরা সিলেট থেকে কুমিল্লার উদ্দেশ্যে রওনা হই এবং ২৫ তারিখ (শনিবার) ভোর সাড়ে ছয়টায় রিয়েল কোচ (বাস) কুমিল্লা শহরের ঈদগাঁয় পৌঁছায়।

ভ্রমণের শুরুতে হোস্ট সোহেল হোসেন সকলের উদ্দেশ্যে বলেন, ভ্রমণের সময় একটা ব্যাপার মাথায় রাখবেন, কোনো অবস্থাতেই স্থানীয়দের সাথে খারাপ আচরণ করা যাবেনা। পৃথিবীর যে প্রান্তেই ভ্রমণ করুন স্থানীয়দের প্রতি বিনয়ী থাকুন। আপনাদের ভ্রমণ সুন্দর হোক।

About somoyer kagoj

Check Also

যুবদল নেতা জিকু দুষলেন বিএনপি নেতা বিপ্লবকে

কুষ্টিয়া অফিস:কুষ্টিয়া সদর উপজেলার আইলচারা পশুহাটের ইজারা নেওয়ায় ইজারাদারের চাচা চাল ব্যবসায়ী আব্দুর রশিদের শহরস্থ …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *