আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর বিমান হামলায় প্রায় প্রতিটি ভবন, স্কুল, মসজিদ, হাসপাতাল এখন ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। সেখানে সাড়ে তিন কোটি টনের বেশি ধ্বংসস্তূপ জমা হয়েছে। যুদ্ধ শেষ হলে এক দুই বছরে এসব ধ্বংসস্তূপ পরিষ্কার করা সম্ভব নয়। জাতিসংঘের মাইন অ্যাকশন এজেন্সি বলছে, এসব ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে নিতে এক দশকের বেশি সময় লেগে যেতে পারে। খবর আল জাজিরার।
গাজায় এখনো যুদ্ধবিরতি নিয়ে সব প্রচেষ্টাই ব্যর্থ হয়েছে। হামাস বা ইসরায়েলি বাহিনী এ বিষয়ে একমত হতে না পারায় যুদ্ধ শেষ হওয়ার কোনো লক্ষণই দেখা যাচ্ছে না। যুদ্ধ শেষ হলে এসব ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে লাখ লাখ ফিলিস্তিনি নাগরিকের আশ্রয়ের ব্যবস্থা করাটাই হয়ে উঠবে একটি বড় চ্যালেঞ্জ। কারণ ইতোমধ্যেই সেখানে ৩ কোটি ৭০ লাখ টন ধ্বংসস্তূপ জমা হয়েছে।
হিউম্যানিটি অ্যান্ড ইনক্লুশনের মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক পরিচালক ফেদেরিকো দেসির মতে, ধ্বংসাবশেষের মধ্যে ১০ হাজারের মতো অবিস্ফোরিত গোলাবারুদ রয়েছে।
তিনি বলেন, এসব বিষয় নিয়ে কাজ করা এনজিও সংস্থাগুলোর ধারণা গত ছয় মাসে গাজায় ৫০ হাজার থেকে এক লাখ বোমা ফেলা হয়েছে। এতে সেখানকার প্রায় বেশিরভাগ ভবনই ধ্বংস হয়ে গেছে। গাজার বেশির ভাগ শহরের চেহারাই পাল্টে গেছে। সর্বত্রই ধ্বংসস্তূপ ছাড়া আর কিছুই চোখে পড়ছে না।
দেসি আল জাজিরাকে বলেন, এই বোমাগুলোর মধ্যে নয় থেকে ১৪ শতাংশের এখনো বিস্ফোরণ ঘটেনি। তাই ধারণা করা হচ্ছে, এখনো সেখানে প্রায় ১০ হাজার অবিস্ফোরিত বোমা এবং কামানের গোলা রয়ে গেছে।
গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের সীমান্তে প্রবেশ করে আকস্মিক হামলা চালায় ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। এরপরেই গাজায় পাল্টা অভিযান শুরু করে ইসরায়েল। অভিযানের নামে সেখানে ৬ মাসের বেশি সময় ধরে নিরীহ ফিলিস্তিনিদের হত্যা করছে ইসরায়েলি বাহিনী।
গাজার হামাস-নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সেখানে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ৩৪ হাজার ৪৫৪ ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছে। এর মধ্যে অধিকাংশই নারী এবং শিশু। এছাড়া আহত হয়েছে আরও ৭৭ হাজার ৫৭৫ জন।
এদিকে রাফায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় আবু তাহা নামের একটি পরিবারের ৯ সদস্য নিহত হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে একটি ছোট শিশুকে উদ্ধার করা হয়েছে। শিশুটির এক প্রতিবেশি তাকে আবু তাহা পরিবারের একটি বারান্দা থেকে উদ্ধার করেন। ধারণা করা হচ্ছে সে তার পরিবারের একমাত্র জীবিত ব্যক্তি। বাকি সবাই হয়তো ইসরায়েলি হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন।
ওই প্রতিবেশি বলেন, আমি তাকে তাদের বারান্দা থেকে উদ্ধার করেছি। শিশুটি সেখানে ঝুঁলে ছিল। সেই হয়তো তার পরিবারের একমাত্র জীবিত ব্যক্তি।