আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের গ্রেপ্তারসহ একাধিক ইস্যুতে রোববার দিল্লির রামলীলা ময়দানে সমাবেশের ডাক দেয় বিজেপিবিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’। সেই সভায় প্রথম বক্তৃতা করতে মঞ্চে ওঠেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর স্ত্রী সুনীতা। তাঁর পরই বক্তৃতা করেন হেমন্ত সোরেনের পত্নী কল্পনা। ‘মহাসমাবেশ’-এর অন্যতম আকর্ষণই ছিলেন এই দুই নারী। খবর এনডিটিভির।
অরবিন্দ কেজরিওয়াল ও হেমন্ত সোরেন দু’জনই বন্দি অবস্থায় আছেন। ইডি হেফাজতে আছেন কেজরিওয়াল আর জমি দুর্নীতি মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে জেলবন্দি আছেন হেমন্ত সোরেন। গ্রেপ্তার হওয়ার আগে অবশ্য হেমন্ত ঝাড়খন্ডের মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দেন। কিন্তু কেজরিওয়াল এখনও দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী রয়েছেন। সেই দিল্লিতেই বিরোধীরা আবারও একবার ‘ঐক্যবদ্ধ’ হলেন।
‘ইন্ডিয়া’ জোটের সমাবেশের সভায় প্রথম বক্তৃতা করতে মঞ্চে ওঠেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর স্ত্রী সুনীতা। এ সময় লোকসভা ভোটে কেজরিওয়ালের ছয়টি প্রতিশ্রুতির কথা শোনালেন তিনি। সেই সঙ্গে তিনি উপস্থিত জনতার উদ্দেশে বলেন, প্রধানমন্ত্রী আমার স্বামীকে জেলে বন্দি করে রেখেছেন। আপনারা বলুন তো এটা ঠিক? আপনারা বিশ্বাস করেন তো কেজরিওয়াল দেশপ্রেমিক এবং সৎ ব্যক্তি? তাঁকে বেশি দিন জেলে বন্দি করে রাখা যাবে না।
সুনীতা যেখানে শেষ করেছেন, ঠিক সেখান থেকেই বক্তৃতা শুরু করেন কল্পনা। তিনি বলেন, আমাদের শক্তি দেশের ১৪০ কোটি মানুষ। এনডিএ সরকার বাবা আম্বেদকরের সংবিধান নষ্ট করে দিতে চাচ্ছে। আমরা তা রুখবই। দেশের মানুষের থেকে বড় কোনো শক্তি হয় না। সেই শক্তি আমাদের সঙ্গে আছে। এই জনসমুদ্রই সেটা প্রমাণ করছে। ভারতের লোকতন্ত্র বাঁচাতেই হবে আমাদের। এদিকে জনসভায় কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী বলেন, এটা নিছক ভোট দেওয়ার নির্বাচন নয়, এটা গণতন্ত্র বাঁচানোর নির্বাচন।
ক্রিকেটের পরিভাষা ব্যবহার করে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী মোদি ইডি, আয়কর, সিবিআইয়ের সাহায্যে ম্যাচ পাতাতে চাইছেন। ভোট শুরুর আগেই মুখ্যমন্ত্রীদের জেলে পুরছেন। কংগ্রেসের ব্যাংক হিসাব জব্দ করছেন। তিনি বিরোধীদের চান না। ভেবেচিন্তে ভোট না দিলে ম্যাচ গড়াপেটার নায়ক কিন্তু জিতে যাবে। ভোটে কারচুপির সন্দেহ প্রকাশ অবশ্য আরজেডির নেতা তেজস্বী যাদবও করেছেন। তাঁর কথায়, যেভাবে ওরা ৪০০ পারের কথা বলতে শুরু করেছে, তাতে ইভিএমে কারচুপি করবে বলে সন্দেহ হচ্ছে। এই জনসভাকে কংগ্রেস কতটা গুরুত্ব দিয়েছে, বোঝা যায় নেতাদের উপস্থিতি দেখলে। কংগ্রেস নেত্রী সোনিয়া গান্ধীও জনসভায় উপস্থিত হন।
সবার ভাষণ শেষ হলে প্রিয়াঙ্কা সবাইকে মনে করিয়ে দেন, রাবণের কাছে সব ছিল। রাজত্ব, অর্থ, লোকবল, শক্তি— সব। রামচন্দ্রের কাছে ছিল শুধু সত্য, সাহস ও ধৈর্য। লড়াইয়ে রামচন্দ্রেরই জয় হয়েছিল। রাবণের মতো মোদির অহংকারও চুরচুর হয়ে ভেঙে পড়বে। এটাই রামলীলা ময়দানের বার্তা।