আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
রমজানকে সামনে রেখে যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা চললেও ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় এখনো হামলা চলমান। হাজার হাজার মানুষের মৃত্যু আর ধংসযজ্ঞের মধ্যেও ফিলিস্তিনিদের প্রশ্ন— এবারের রমজানে তারা পবিত্র আল আকসায় নামাজ আদায় করতে পারবেন কি না? কারণ গত কিছুদিন ধরেই ইসরায়েলের মন্ত্রীরা এ ব্যাপারে নেতিবাচক মন্তব্য করে আসছিলেন।
প্রতি বছর রমজান মাসে আল আকসা মসজিদে নামাজ আদায় করেন লাখ লাখ মুসল্লি। তবে গত পাঁচ মাস ধরে ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযান এবং ইসরায়েলি নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে হামাসসহ সাধারণ ফিলিস্তিনিদের সংঘাতের কারণে এ বছরের পরিস্থিতি সম্পূর্ণ ভিন্ন। তারওপর ইসরায়েলের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ইতামার বেন গভির বলেছেন, রমজানে আল আকসায় মুসল্লিদের প্রবেশ করতে দেওয়া কোনোভাবেই উচিত হবে না।
ইসরায়েলের মন্ত্রিসভার অধিকাংশ সদস্যের মতও এমনটাই। তবে এ ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের অনুরোধের পর নড়েচড়ে বসেছে ইসরায়েল। যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র ম্যাথু মিলার সাংবাদিকদের বলেছেন, ইসরায়েলকে রমজান মাসে শান্তিপূর্ণভাবে সেখানকার বাসিন্দাদের আল আকসা প্রাঙ্গণে নামাজ আদায় করতে দেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে।
এরই প্রেক্ষিতে আগের অবস্থান থেকে সরে গিয়ে এবারের রমজানে আল আকসায় নামাজ আদায়ের অনুমতি দিয়েছে ইসরায়েল। মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে দেশটির প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর জানিয়ে দিয়েছে, বিগত বছরগুলোর মতো চলতি বছরেও রমজান মাসে পবিত্র আল আকসা মসজিদে নামাজ আদায় করতে পারবেন ফিলিস্তিনি মুসল্লিরা।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ‘বিগত বছরগুলোতে রমজানের প্রথম সপ্তাহে যত সংখ্যক আল আকসায় আসতেন, এ বছরও তার কোনো ব্যতিক্রম হবে না। তবে প্রতি সপ্তাহে জেরুজালেম ও টেম্পল মাউন্ট এলাকার নিরাপত্তা পরিস্থিতি পর্যালোচনা করা হবে। তার ভিত্তিতে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
আগামী ১০ বা ১১ মার্চ থেকে শুরু হতে যাচ্ছে রমজান মাস। এ নিয়ে ইসরায়েলের যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভার পক্ষ থেকে বলা হয়, ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের জন্য রমজান একটি পবিত্র মাস। বিগত বছরগুলোর মতে এ বছরও এই মাসের পবিত্রতা অক্ষুণ্ন রাখার সর্বোচ্চ চেষ্টা করবে ইসরায়েল।
গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের সীমান্তে হামাস যোদ্ধাদের অতর্কিত হামলাকে কেন্দ্র করে ফিলিস্তিনের গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী। অভিযানে এ পর্যন্ত নিহত হয়েছেন ৩০ হাজার ৫৩৪ জন, আহত হয়েছেন আরও ৭১ হাজার ৯৮০ জন ফিলিস্তিনি। নিহত ও আহতদের মধ্যে একটি বড় অংশই নারী, শিশু, কিশোর-কিশোরী এবং বেসামরিক লোকজন।