Monday , January 13 2025

বিড়ালের গলায় ঘণ্টা বাঁধবে কে, প্রশ্ন শেখ হাসিনার

নিজস্ব প্রতিবেদক:

রাশিয়া-ইউক্রেন এবং ফিলিস্তিন-ইসরায়েল যুদ্ধ বন্ধ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিশ্ব মোড়লরাই যদি যুদ্ধে লিপ্ত হয়ে যায়, তবে বিড়ালের গলায় ঘণ্টা বাঁধবে কে?

শুক্রবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) সকালে গণভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনে অংশগ্রহণ উপলক্ষে জার্মানি সফর নিয়ে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

রাশিয়া-ইউক্রেন ও ফিলিস্তিন-ইসরায়েল যুদ্ধ বন্ধের বিষয়ে বিশ্বনেতাদের অবস্থান প্রশ্নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, যুদ্ধ বন্ধ করার কথা যাদেরই বলি- সবাই সমর্থন করে। কিন্তু উদ্যোগটা নেবে কে? এটিও একটি প্রশ্ন। যারা বিশ্ব মোড়ল, তারাই যদি যুদ্ধে লিপ্ত হয়ে যায়, তাহলে আর বিড়ালের গলায় ঘণ্টা বাঁধবে কে?

তিনি বলেন, আমাদের বক্তব্য স্পষ্ট। আমরা যুদ্ধ চাই না। যুদ্ধের ভুক্তভোগী আমরা। মানুষ যে গণহত্যার শিকার হয়েছে সেটা আমরা জানি। পরাশক্তিগুলোর সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের বিশ্ব মোড়লরা দ্বিমুখী নীতিতে বিশ্বাস করে। ফিলিস্তিনের সব জমি দখল করে রেখেছে, সেটি ইনভেশন নয়, ইউক্রেনেরটি ইনভেশন। এ দ্বিমুখী নীতি কেন হবে, সেটি আমার প্রশ্ন ছিল। আমি বলেছি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, অনেকই সাহস করে বলবে না। নানাজনের নানা দুর্বলতা আছে, আমার কোনো দুর্বলতা নেই। আমার কোনো চাওয়া-পাওয়া নেই। আমার কাছে ক্ষমতা হলো, ‘থাকে লক্ষ্মী যায় বালাই’, একটি কথা আছে না, আমার কাছে সেটিই। থাকলে ভালো, আমি দেশের জন্য কাজ করতে পারব। না থাকলে আমার কোনো আফসোস নেই।

তিনি বলেন, যুদ্ধের কারণে সারাবিশ্ব কষ্ট পাচ্ছে। এর ক্ষতিকর প্রভাব শুধু একটি জায়গায় সীমাবদ্ধ থাকছে না। সারা বিশ্বে এর প্রভাব পড়ছে। মানুষ কষ্ট পাচ্ছে। তা বন্ধ করতে দাবি জানিয়েছে।

রোহিঙ্গা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছি। কিন্তু মিয়ানমারের সঙ্গে যুদ্ধ করতে যাইনি, ঝগড়া করতে যাইনি। আমরা ধৈর্য ধরেছি, আলোচনা করেছি। আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের চেষ্টা করে যাচ্ছি, তারা ফেরত নিক। এখন যে অবস্থা চলছে, আমি সবাইকে বলেছি ধৈর্য ধরতে।

তিনি বলেন, কোনো কিছুতে আমাদের কোনো রকম উত্তেজিত হলে চলবে না। শান্ত মাথায় পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হবে। তা করে আমরা সুফল পাচ্ছি। দক্ষিণ এশিয়া, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় আমরাই কিন্তু সবচেয়ে সুস্থ অবস্থায় আছি। অন্য দেশগুলো কষ্ট পাচ্ছে।

রোহিঙ্গা সমস্যা দিনে দিনে প্রকট হচ্ছে। এটি অনেক দিন হয়ে গেছে। সেই সমস্যার সমাধান কোথায়? এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, রোহিঙ্গা নিয়ে আমরা আলোচনা করছি বারবার। আসলে মিয়ানমারের অবস্থা এত খারাপ! আর বিশ্বনেতাদের সঙ্গে যখন কথা বলি, সবাই রোহিঙ্গাদের প্রতি সহানুভূতি দেখান। কিন্তু আসলে তাদের ফিরিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে খুব একটা কার্যকর কিছু হচ্ছে না। এই হলো বাস্তবতা। নতুন কোনো আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্ম তৈরির চিন্তা কী করছেন কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি সাধারণ একজন মানুষ। ছোট একটি ভূখণ্ডে বিশাল জনগোষ্ঠী। আমি তা নিয়েই ব্যস্ত। তবে কোথাও কোনো অন্যায় দেখলে আমি আমার কণ্ঠ সোচ্চার করি, প্রতিবাদ করি। যুদ্ধ চাই না, শান্তি চাই- এই কথাটি বলি। কিন্তু কোনো প্ল্যাটফর্ম করার মতো দক্ষতা আমার নেই। যোগ্যতাও আমার নেই। সেই চিন্তাও আমার নেই।

শেখ হাসিনা বলেন, আমি মনে করি অনেক প্ল্যাটফর্ম হয়ে গেছে। কিন্তু আসলে তো কাজের সময় কাজে লাগে না। সেটি হলো বাস্তব। না হলে আজ গাজায় যুদ্ধ বন্ধে নিরাপত্তা কাউন্সিলে প্রস্তাব আসে। সেখানে ভেটো দেওয়া হয়। বাংলাদেশের যুদ্ধ চলার সময়ও এ অবস্থা আমরা দেখেছি। আমার যেটুকু ক্ষমতা, আমার ক্ষমতা সম্পর্কে আমি যথেষ্ট সচেতন। এর চেয়ে বড় কিছু চিন্তা করার প্রয়োজন আছে বলে আমি মনে করি না। সেই দক্ষতাও আমার নেই।

About somoyer kagoj

Check Also

ফিরিয়ে আনা হচ্ছে মোজাম্বিকে আটকে পড়া বাংলাদেশিদের

আন্তর্জতিক ডেস্ক:পরিপ্রেক্ষিতে সেখানে আটকে পড়া বাংলাদেশি নাগরিকদের ফিরিয়ে আনা হচ্ছে। মোজাম্বিকের পাশের দেশ মালাউই হয়ে …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *