আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
পাকিস্তানে ভোটে কারচুপির অভিযোগে থমথমে রাজনৈতিক পরিস্থিতি। শনিবার দেশজুড়ে বিক্ষোভ করেছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের দল। দলটিকে থামাতে রাজধানী ইসলামাবাদে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। এবার থানায় আত্মসমর্পণ করেছেন এক নির্বাচন কমিশনার। রোববার (১৮ ফেব্রুয়ারি) ডনের এক প্রতিবেদেনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভোট কারচুপির অভিযোগে বিস্ফোরক মন্তব্যের পর রাওয়ালপিন্ডি কমিশনার লিয়াকত আলি চাথা নিজেই পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেছেন। এ ছাড়া তার কার্যালয় সিল করে দেওয়া হয়েছে।
স্থানীয় এক কর্মকর্তা জানান, কার্যালয় সিলগালা করা হয়েছে। নির্বাচনী সরঞ্জাম যাতে বেহাত বা কোনোকিছু যাতে তসরুফ না হয় সেজন্য প্রশাসন এমন পদক্ষেপ নিয়েছে।
পুলিশের এক মুখপাত্র বলেন, ওই কমিশনারের বিরুদ্ধে কোনো মামলা না থাকায় তাকে আটক করা হয়নি। তবে অভিযোগের কারণে তাকে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে তাকে অজ্ঞাত স্থানে স্থানান্তর করা হয়েছে।
নির্বাচনে কারচুপি স্বীকার করে রাওয়ালপিন্ডির কমিশনারের পদত্যাগ
জেলা প্রশাসনের এক সিনিয়র কর্মকর্তা জানান, নির্বাচনী কর্মচারী এবং জেলা ও রিটার্নিং কর্মকর্তাদের নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। এ ছাড়া নির্বাচনীসামগ্রী এবং তথ্য সংরক্ষণ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, পাকিস্তান নির্বাচন কমিশন (ইসিপি) ইতোমধ্যে ফলাফল ঘোষণা করেছে। তবে রিটার্নিং কার্যালয়সহ অফিসিয়াল রেকর্ডও সংরক্ষণ করা হয়েছে।
এর আগে জিও নিউজ জানায়, কারচুপির অভিযোগ মাথা পেতে নিয়ে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন পাকিস্তানের রাওয়ালপিন্ডির কমিশনার লিয়াকত আলি চাথা।
শনিবার লিয়াকত আলি বলেন, রাওয়ালপিন্ডির জাতীয় ও প্রাদেশিক পরিষদের ভোটে কারচুপি হয়েছে। এ কাজে তিনি সহায়তা করেছেন। এ জন্য বিবেকের তাড়নাবোধ থেকে পদত্যাগ করেছেন।
রাওয়ালপিন্ডি বিভাগে ১৩টি জাতীয় পরিষদ আসন এবং ১৭টি প্রাদেশিক পরিষদ আসন রয়েছে। এসব আসনের মধ্যে জাতীয় পরিষদে পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজের (পিএমএল-এন) প্রার্থীরা ১১টি আসনে নির্বাচিত হয়েছেন। বাকি দুটির একটিতে একজন স্বতন্ত্র এবং অন্যজন পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) প্রার্থী নির্বাচিত হয়েছেন। অন্যদিকে প্রাদেশিক পরিষদের ২৭টি আসের মধ্যে ১৫টি পিএমএল-এন এবং ১১টি আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী নির্বাচিত হয়েছেন।
লিয়াকত আলি বলেন, এই অন্যায়ের পেছনে কে জড়িত, তা কারও অজানা নয়। জাতীয় পরিষদের ১৩ জন প্রার্থী হেরে যান। কিন্তু তাদের ৭০ হাজার ভোটের ব্যবধানে জয়ী ঘোষণা করতে আমাদের বাধ্য করা হয়েছে।
তবে রাওয়ালপিন্ডির কমিশনারের এমন দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন (ইসিপি)। সংস্থাটি বলছে, কমিশনের কোনো কর্মকর্তা নির্বাচনের ফল পরিবর্তনের কোনো নির্দেশ দেননি।