বিনোদন ডেস্ক:
ভারতের উত্তর প্রদেশের অযোধ্যায় বিশাল প্রাঙ্গণে ১৮০০ কোটি টাকারও বেশি খরচ করে তৈরি করা হয়েছে হিন্দু দেবতা রামচন্দ্রের মন্দির। আজ (সোমবার) সেই মন্দিরের উদ্বোধন করেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
প্রায় ৮ হাজার মানুষের উপস্থিতিতে এই মন্দিরের উদ্বোধন করা হয়েছে। যেখানে উপস্থিত ছিলেন রাজনীতিবিদ থেকে শুরু করে বলিউড অভিনেতা-অভিনেত্রী ও ক্রিকেট তারকারাও।
সোমবার সকাল থেকেই মন্দির প্রাঙ্গনে হাজির হতে শুরু করেন বলিউড তারকারা। যাদের মধ্যে ছিলেন অমিতাভ বচ্চন, অভিষেক বচ্চন, মাধুরী দিক্ষীত, কঙ্গনা রানাউত, অনুপম খের, আলিয়া ভাট রণবীর কাপুর, ভিকি কৌশল, ক্যাটরিনা কাইফসহ আরও অনেকে।
শুটিংয়ের কারণে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত না হতে পারলেও এক ভিডিওবার্তা দিয়েছেন অক্ষয় কুমার ও টাইগার শ্রফ। এছাড়াও উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আগেই পৌঁছে গিয়েছিলেন বিবেক অগ্নিহোত্রী, হেমা মালিনী, ওম রউতের মতো তারকারা। উপস্থিত ছিলেন দক্ষিণী তারকা রজনীকান্ত, ধানুশ, রাম চরণ, যশ সহ আরো অনেকে।
তবে বলিউডের প্রভাবশালী তিন খানকে দেখা যায়নি রাম মন্দিরের উদ্বোধনে। কেন দেখা যায়নি, সে বিষয়েও স্পষ্ট কোনো কারণ বলতে পারেনি ভারতীয় সংবাদমাধ্যম।
ফ্রি প্রেস জার্নালের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাম মন্দিরের উদ্বোধনে শাহরুখ, সালমান ও আমির খানকে আমন্ত্রন জানানো হয়নি। যে কারণে অনুষ্ঠানেও তাদের দেখা মেলেনি। বিষয়টি দৃষ্টি এড়ায়নি ভক্তদের।
ওই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, তাহলে কী তিন খান মুসলিম বলেই রাম মন্দিরের উদ্বোধনে তাদের দেখা যায়নি? সেটা হয়তো তারাই বলতে পারবে, যারা বলিউডের প্রভাবশালী এই তিন তারকাকে নিমন্ত্রন জানাননি।
তবে শাহরুখ, সালমান, আমির যে হিন্দু ধর্মকেও সম্মান করেন, সেটাও মনে করিয়ে দিয়েছে ভারতীয় ওই সংবাদমাধ্যম। কয়েকমাস আগেই সিনেমা মুক্তিকে কেন্দ্র করে বৈষ্ণো দেবী মন্দির গিয়ে পূজা দিয়েছিলেন শাহরুখ। সালমানকেও দেখা গেছে গনেশের পূজায়। এছাড়া তার সুপারহিট সিনেমা ‘বাজরাঙ্গি ভাইজান’-এ দেখা মিলেছে হনুমান ভক্ত তিনি। আমির খান সদ্য অনুষ্ঠিত তার মেয়ের বিয়েতেও হিন্দু ধর্মের বিভিন্ন রীতি অনুসরণ করেছেন।
তাই ভক্তদের এমনটা ভাবার সুযোগ নেই, হিন্দু ধর্মের বড় আয়োজন বলেই সেখানে যাননি শাহরুখ, সালমান, আমির। বরং ভারতীয় কয়েকটি সংবাদমাধ্যমের দাবি, তাদেরকে এই অনুষ্ঠানে আমন্ত্রন জানানো হয়নি।
এদিকে রাম মন্দিরের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হলেও না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কংগ্রেস। এ ছাড়া শিবসেনার উদ্ধব ঠাকরে, সমাজবাদী পার্টির অখিলেশ যাদব, তৃণমূল কংগ্রেসের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কিংবা সিপিএমের সীতারাম ইয়েচুরিও জানিয়ে দিয়েছেন, ওই অনুষ্ঠানে তারা যাবেন না।
মন্দিরটি যেখানে তৈরি হয়েছে, সেটা ভারতের সবচেয়ে বিতর্কিত ধর্মীয় স্থানগুলোর অন্যতম। ওখানেই একসময়ে ছিল ষোড়শ শতাব্দীতে তৈরি বাবরি মসজিদ। রাম মন্দির ধ্বংস করে ওই মসজিদ গড়া হয়েছিল, এই দাবি তুলে উন্মত্ত হিন্দু জনতা ১৯৯২ সালে মসজিদটি ভেঙে দিয়েছিল। তারপরে সারা দেশে শুরু হয়েছিল সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা, মারা যান প্রায় দুই হাজার মানুষ।