আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
ইয়েমেনে ইরান-সমর্থিত হুতি যোদ্ধাদের ওপর চতুর্থ দফা হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। বুধবার রাতে পেন্টাগনের কর্মকর্তারা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। লোহিত সাগরে বাণিজ্যিক জাহাজে হামলায় ব্যবহৃত হতে পারে হুতিদের এমন ১৪টি ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহত করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন কমান্ড সেন্টকম বলেছে, তাদের নৌবাহিনীর জাহাজ থেকে ছোঁড়া টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র দ্বারা হুতিদের এসব লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র হুতিদের আবারও ‘বৈশ্বিক সন্ত্রাসী সংগঠন’ হিসেবে উল্লেখ করার পর এই হামলা চালানো হলো।
মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান বলেছেন, লোহিত সাগরে বাণিজ্যিক জাহাজে চলমান হামলার জবাব হিসেবে এই পদক্ষেপ নিয়েছে বাইডেন প্রশাসন।
লোহিত সাগরে বাণিজ্যিক জাহাজ লক্ষ্য করে সম্প্রতি একের পর এক হামলা চালিয়ে আসছে ইয়েমেনের হুতি যোদ্ধারা। গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের প্রতিশোধ নিতে এ হামলা চালানো হচ্ছে। এর ফলে বিশ্ব বাণিজ্যের গুরুত্বপূর্ণ এ রুটে জাহাজ চলাচলে হুমকি তৈরি হয়। এর জবাবে এবার হুতিদের ওপর একযোগে ব্যাপক হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য। গোষ্ঠীটির সামরিক স্থাপনা লক্ষ্য করে জাহাজ ও বিমান থেকে হামলা চালানো হয়। প্রয়োজনে আরও হামলা করা হবে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
অন্যদিকে, হুতি গোষ্ঠী দেশ দুটিকে হুঁশিয়ার করে বলেছে, এই ‘নির্মম আগ্রাসনের’ জন্য তাদের ‘চড়া মূল্য দিতে হবে’।
যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্র দেশগুলোকে হামলার ক্ষেত্রে সংযমী হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে সৌদি আরব। পাশাপাশি উত্তেজনা না বাড়ানোরও আহ্বান জানায় দেশটি। সৌদি আরব নিজেও সাম্প্রতিক মাসগুলোয় হুতিদের সঙ্গে শান্তি আলোচনায় যুক্ত রয়েছে। দেশটির পররাষ্ট্র দপ্তরের এক বিবৃতির উদ্ধৃতি দিয়ে সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, ‘গভীর উদ্বেগের’ সঙ্গে রিয়াদ পুরো পরিস্থিতির ওপর নিবিড়ভাবে নজর রাখছে।
হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে রাশিয়া। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা বলেছেন, মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা বাড়াতেই ইয়েমেনে পশ্চিমারা বিমান হামলা চালিয়েছে। তাদের এই হামলা মধ্যপ্রাচ্যকে আরও অস্থিতিশীল করবে।
রাশিয়া এর আগে গাজায় ইসরায়েলি হামলারও নিন্দা জানিয়েছে। পাশাপাশি জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে গাজায় যুদ্ধবিরতির বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রেরও সমালোচনা করেছে দেশটি। এ ছাড়া এ হামলার প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ইরান, জর্ডান, ন্যাটো, হিজবুল্লাহ, হামাস, ইসলামিক জিহাদ, ফ্রান্স, জার্মানি, বেলজিয়াম, নেদারল্যান্ডস, ডেনমার্ক ও ওমান।