Tuesday , December 3 2024

আইসিজেতে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে মামলায় বাংলাদেশের সমর্থন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার আদালতে (আইসিজে) ইসরায়েলের বিরুদ্ধে দক্ষিণ আফ্রিকার মামলার প্রতি সমর্থন জানিয়েছে বাংলাদেশ। ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আজ রবিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানায়।

দক্ষিণ আফ্রিকা আইসিজেতে দায়ের করা মামলায় অভিযোগ করেছে, গাজায় ফিলিস্তিনিদের ওপর জেনোসাইড চালানোর মাধ্যমে জেনোসাইড প্রতিরোধ ও শাস্তি সংক্রান্ত ১৯৪৮ সালের কনভেনশন (জেনোসাইড কনভেনশন) লঙ্ঘন করেছে।

১৯৪৮ সালে জাতিসংঘের কনভেনশনে ‘জেনোসাইড’ শব্দটি প্রথম ব্যবহৃত হয়। জার্মানি ও আন্তর্জাতিক আইন অনুসারে, যদি ইচ্ছে করে একটি নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর মানুষকে হত্যা করা হয় তাহলে সেটি ‘জেনোসাইড’ বলে বিবেচিত হতে পারে। তবে যুক্তরাষ্ট্রে শব্দটি আরো বড় পরিসরে ব্যবহৃত হয়। সেখানে এমন ঘটনাকেও জেনোসাইড বলা হয়, যে ঘটনায় হয়তো কেউ প্রাণ হারায়নি।

জেনোসাইড কনভেনশনের দ্বিতীয় অনুচ্ছেদে অনুযায়ী, ‘জেনোসাইড বলতে কোনো জাতিগত, নৃতাত্ত্বিক, বর্ণগত অথবা ধর্মীয় গোষ্ঠীকে সম্পূর্ণভাবে অথবা আংশিকভাবে ধ্বংস করার অভিপ্রায় নিয়ে করা নিম্নোক্ত কাজগুলোকে জেনোসাইড বলে গণ্য করা হবে, (ক) ওই গোষ্ঠী (বা দলের) সদস্যদের হত্যা করা; (খ) ওই গোষ্ঠীর সদস্যদের মারাত্মক শারীরিক বা মানসিক ক্ষতি করা; (গ) ইচ্ছাকৃতভাবে ওই গোষ্ঠীর জীবনের ওপর এমন অবস্থা আরোপ করা যাতে এটির সম্পূর্ণ বা আংশিক শারীরিক ধ্বংস সাধিত হয়; (ঘ) ওই গোষ্ঠীর মধ্যে নতুন (শিশুর) জন্ম বন্ধ করার জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করা; এবং (ঙ) জোরপূর্বক ওই গোষ্ঠীর শিশুদেরকে অন্য গোষ্ঠীর কাছে হস্তান্তর করা।’

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের গণহত্যা বন্ধে অন্তর্বর্তী আদেশের জন্য দক্ষিণ আফ্রিকার আবেদনের প্রতিও বাংলাদেশ সমর্থন রয়েছে। দক্ষিণ আফ্রিকার অন্তর্বর্তী আদেশের আবেদনের মধ্যে আছে, গাজায় ইসরায়েলের সব ধরনের সামরিক অভিযান বন্ধে, গাজার সর্বত্র নিরাপদ, পর্যাপ্ত এবং নিরবচ্ছিন্ন মানবিক সহায়তার অনুমতি নিতে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর চলমান আক্রমণ হাজার হাজার নিরীহ ফিলিস্তিনি বেসামরিক নাগরিকের প্রাণহানি ঘটিয়েছে। নিহতদের অধিকাংশই নারী ও শিশু। বাংলাদেশে ইসরায়েলের ইচ্ছাকৃত এই আগ্রাসনকে জেনোসাইড কনভেনশন সহ আন্তর্জাতিক আইনের স্পষ্ট অবজ্ঞা ও লঙ্ঘন বলে মনে করে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, জেনোসাইড কনভেনশনের রাষ্ট্রপক্ষ হিসেবে, বাংলাদেশ জেনোসাইড সংক্রান্ত অপরাধ প্রতিরোধ ও শাস্তির জন্য ওই কনভেনশনের অধীনে তাদের বাধ্যবাধকতাকে মেনে চলতে সব রাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানায়। বাংলাদেশ অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি এবং গাজায় দ্রুত, নিরাপদ ও নির্বিঘ্নে জীবন রক্ষাকারী সহায়তা প্রদানের আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেছে।

বাংলাদেশ ফিলিস্তিনের ওপর ইসরায়েলের দখলদারির অবসানের আহ্বান জানিয়েছে। বাংলাদেশ ১৯৬৭ সালের আগের সীমান্ত অনুযায়ী পূর্ব জেরুজালেমকে রাজধানী হিসেবে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা এবং একটি দীর্ঘস্থায়ী ও স্থায়ী সমাধানের জন্য আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেছে।

About somoyer kagoj

Check Also

ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি, কাঁদছেন-উদযাপন করছেন লেবাননের মানুষ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: দীর্ঘ ১৪ মাস যুদ্ধের পর দখলদার ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি চুক্তি হয়েছে লেবাননের সশস্ত্র …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *