Monday , January 13 2025

পরিচ্ছন্নতাকর্মীর চাকরি দেওয়ার কথা বলে ২০ লাখ টাকা নেওয়ার অভিযোগে

দিনাজপুর প্রতিনিধি:

প্রেসক্লাবের সামনের সড়কে দিনাজপুর সদর উপজেলার ফাজিলপুর ইউনিয়নের ঝানজিরা এলাকার অর্ধশতাধিক এলাকাবাসী ও ভুক্তভোগী মানববন্ধন করেন
প্রেসক্লাবের সামনের সড়কে দিনাজপুর সদর উপজেলার ফাজিলপুর ইউনিয়নের ঝানজিরা এলাকার অর্ধশতাধিক এলাকাবাসী ও ভুক্তভোগী মানববন্ধন করেন

দিনাজপুর সদরের ঝানজিরা আলিম মাদ্রাসায় পরিচ্ছন্নতাকর্মীর চাকরি দেওয়ার কথা বলে মাদ্রাসার সভাপতি ও আওয়ামী লীগ নেতা মোতাহার হোসেন ২০ লাখ টাকা নিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন এক যুবক। একইসঙ্গে মাদ্রাসার আরও তিন পদে নিয়োগ দেওয়ার কথা বলে টাকা নিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় সভাপতির বিচার ও নিয়োগ বাতিলের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন ভুক্তভোগীরা।

তাদের অভিযোগ, মাদ্রাসায় বিভিন্ন পদে চাকরি দেওয়ার কথা বলে সাত জনের কাছ থেকে ২০ লাখ টাকা করে নিলেও চাকরি দেননি মোতাহার হোসেন। তাদের স্থলে অন্যদের চাকরি দিয়েছেন।

এর প্রতিবাদে বুধবার (১০ জানুয়ারি) দুপুরে প্রেসক্লাবের সামনের সড়কে দিনাজপুর সদর উপজেলার ফাজিলপুর ইউনিয়নের ঝানজিরা এলাকার অর্ধশতাধিক এলাকাবাসী ও ভুক্তভোগী মানববন্ধন করেন।

মোতাহার হোসেন ফাজিলপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ঝানজিরা আলিম মাদ্রাসার সভাপতি। এর আগে ৮ জানুয়ারি ঝানজিরা আলিম মাদ্রাসার সহকারী সুপারিনটেনডেন্ট, পরিচ্ছন্নতাকর্মী, নিরাপত্তাকর্মী ও আয়া পদে নিয়োগ পরীক্ষা হয়।

চাকরিপ্রত্যাশী ঝানজিরা এলাকার যুবক রায়হান কবির বলেন, ‘আমি ঝানজিরা আলিম মাদ্রাসার নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেখে পরিচ্ছন্নতাকর্মী পদে আবেদন করেছিলাম। তখন মাদ্রাসার সভাপতি মোতাহার হোসেন আমাকে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে ২০ লাখ টাকা নেন। ৮ জানুয়ারি নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু সেদিন ফল ঘোষণা করা হয়নি। ৯ জানুয়ারি ওই পদে আরেকজনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। যে নিয়োগ পেয়েছেন, তার ফল কী সেটাও প্রকাশ করা হয়নি। এভাবে তো আসলে নিয়োগ হয় না। আমি এই নিয়োগ বাতিল করে আবারও পরীক্ষা নিয়ে সুষ্ঠু নিয়োগের দাবি জানাই।’

ঝানজিরা এলাকার চাকরিপ্রত্যাশী আরেক যুবকের বাবা আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘আমার ছেলেকে চাকরি দেওয়ার কথা বলে ২০ লাখ টাকা নিয়েছেন মাদ্রাসার সভাপতি মোতাহার হোসেন। ধারদেনা করে এবং ব্র্যাক ব্যাংক থেকে কিস্তি তুলে এই টাকা দিয়েছি। অথচ টাকা নিয়ে আমার ছেলেকে চাকরি না দিয়ে অন্যজনকে দিয়েছেন। আমি টাকা ফেরত চাই।’

ঝানজিরা এলাকার জিন্নুর মেহেদী বলেন, ‘পরীক্ষার উদ্দেশ্য হলো যোগ্য প্রার্থীকে নির্বাচন করা। এতে যারা অংশ নেন, তাদের ফল প্রকাশ করা হয়। ফল অনুযায়ী যারা যোগ্য তাদের নিয়োগ দেওয়া হয়। কিন্তু এই মাদ্রাসার যে নিয়োগ পরীক্ষা হয়েছে, তার ফল প্রকাশ করা হয়নি। কত নম্বরের পরীক্ষা হয়েছে, তা প্রশ্নপত্রে উল্লেখ করা হয়নি। নিয়োগের কথা বলে অনেকের কাছ থেকে টাকা নিয়ে নিজের পরিচিত লোকজনকে চাকরি দিয়েছেন মোতাহার হোসেন। আমরা এলাকাবাসী হিসেবে টাকার বিনিময়ে অযোগ্যদের আমাদের মাদ্রাসায় নিয়োগ দেবে, এটা আমরা চাই না। এই নিয়োগ বাতিল করে আবার পরক্ষা নিয়ে যোগ্য প্রার্থীকে যেন নিয়োগ দেওয়া হয়, সেজন্য মানববন্ধনের আয়োজন করেছি আমরা।’

তবে টাকার বিনিময়ে নিয়োগের বিষয়টি সঠিক নয় বলে জানিয়েছেন ফাজিলপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ঝানজিরা আলিম মাদ্রাসার সভাপতি মোতাহার হোসেন। তিনি বলেন, ‘টাকার বিনিময়ে নিয়োগের বিষয়টি মিথ্যা। নিয়মমাফিকভাবে নিয়োগ হয়েছে। কারও কাছ থেকে ২০ লাখ টাকা করে নিইনি।’

About somoyer kagoj

Check Also

দুই বাংলাদেশি জেলেকে ধরে নিয়ে গেছে বিএসএফ

রাজশাহী প্রতিনিধি:রাজশাহীর চারঘাট সীমান্ত থেকে দুই বাংলাদেশি জেলেকে ধরে নিয়ে গেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *