নিজস্ব প্রতিবেদক:
নাশকতার অভিযোগে রাজধানীর পল্টন ও রমনা থানার পৃথক ৯ মামলায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করেছেন আদালত। একই সঙ্গে মামলাগুলোয় অধিকতর জামিন শুনানির দিন আগামীকাল বুধবার দিন ধার্য করেছেন আদালত।
আজ মঙ্গলবার ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সুলতান সোহাগ উদ্দিন এ আদেশ দেন।
এদিন মির্জা ফখরুলকে কারাগার থেকে গ্রেপ্তার দেখানোসহ জামিনের আবেদন করেন তার আইনজীবীরা। শুনানি শেষে বিচারক গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করেন। একই সঙ্গে জামিন শুনানির জন্য বুধবার দিন ধার্য করেন আদালত।
এর আগে বেলা ১১টা ৪০ মিনিটের দিকে মির্জা ফখরুলকে কালো একটি গাড়িতে করে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয়। এ সময় তাকে আদালতের হাজতখানায় রাখা হয়। তার গাড়ি আদালত চত্বরে প্রবেশের সঙ্গে সঙ্গে বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা ফখরুলের মুক্তি চেয়ে মিছিল করেন। শুনানিকালে তাকে আদালতে ওঠানো হয়।
শুনানিতে আইনজীবীরা বলেন, পাকিস্তান আমলে বঙ্গবন্ধুসহ ৩ হাজার আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়। স্বাধীন দেশেও এখন বিএনপির হাজার হাজার নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। মির্জা ফখরুল ইসলাম বহিঃর্বিশ্বে ক্লিন ইমেজের নেতা হিসেবে পরিচিত। অথচ তার নামে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে।
তারা বলেন, মামলাগুলোতে তার বিরুদ্ধে গত ২৮ অক্টোবর মহাসমাবেশে উসকানি দেওয়ার অভিযোগ। সারাবিশ্ব জানে বিএনপি ভোটের অধিকারের জন্য লড়াই করছে। মির্জা ফখরুল ইসলাম যদি আপস করতেন তাহলে ৭৬ বছর বয়সে কারাগারে যেতে হতো না। গ্রেপ্তারের পর তার ৫ কেজি ওজন কমে গেছে। তিনি হার্টের রোগী। জামিন পেলে পালাবেন না। অতীতে তিনি জামিন নিয়ে কোনো শর্ত ভঙ্গ করেননি।
আইনজীবীরা আরও বলেন, তিনি বাংলাদেশের একজন জাতীয় নেতা। তিনি সাবেক মন্ত্রী ছিলেন। রাজনীতিবিদদের বাঁচতে দিন। অন্য আসামিরা যেমন জামিন পাচ্ছে। তিনি অসুস্থ ব্যক্তি, বয়স্ক ব্যক্তি। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের ১০০টির মতো মামলা রয়েছে। তিনি নিয়মিত আদালতে আসেন মামলার হাজিরা দেন। তাকে জামিন দিলে তিনি আদালতের শর্ত মেনে হাজিরা দেবেন।
এরপর আইনজীবীরা বলেন, ৯টি মামলা। শুনানির জন্য অনেক সময় দরকার। তখন বিচারক বলেন, তাহলে বুধবার বাকি শুনানি করেন। আইনজীবীরা সম্মতি দিলে আদালত বুধবার অধিকতর শুনানির জন্য রাখেন।
গত ৩১ ডিসেম্বর ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রেজাউল করিম চৌধুরীর আদালতে মির্জা ফখরুলের পক্ষে জামিনের আবেদন করেন তার আইনজীবী সৈয়দ জয়নুল আবেদীন মেজবাহ। শুনানি শেষে আদালত আসামির উপস্থিতিতে শুনানির জন্য ৯ জানুয়ারি ধার্য করেন।
উল্লেখ্য, গত ২৮ অক্টোবর বিএনপির মহাসমাবেশ কেন্দ্র করে মির্জা ফখরুলের বিরুদ্ধে ১১টি মামলা হয়। এর মধ্যে পল্টন থানার আট মামলা ও রমনা মডেল থানার তিন মামলা রয়েছে। প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলা মামলায় গত ২৯ অক্টোবর তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর থেকে তরয়েছেন বিএনপির এই নেতা।