স্পোর্টস ডেস্ক:
গত বছরের এই দিনে পৃথিবীর মায়া কাটিয়ে অন্য জগতে পাড়ি জমিয়েছিলেন পেলে। দেখতে দেখতে এক বছর পূর্ণ হয়ে গেল।
ব্রাজিলিয়ান এই কিংবদন্তি পৃথিবীতে না থাকলেও ঠিকই বেঁচে আছেন লাখো সমর্থকদের মনে। আজ এই ফুটবল রাজার প্রথম মৃত্যুবার্ষিকীতে তাকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছেন তারা।
২০২২ সালের ২৯ ডিসেম্বর ব্রাজিলের সাও পাওলোর আলবার্ট আইনস্টাইন হাসপাতালে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেছেন পেলে। ক্যান্সারের সঙ্গে লড়াই করে ৮২ বছর বয়সে মারা গেলেন ব্রাজিলিয়ান এই কিংবদন্তি। ফুটবলের সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ খেলোয়াড় হিসেবে অনেকের কাছে প্রশংসিত পেলে এর আগের বছরগুলিতে স্বাস্থ্যগত সমস্যায় ভুগছিলেন। ২০১৮ বিশ্বকাপ চলাকালে তাঁকে হুইলচেয়ারে বসা অবস্থায় দেখা যায়। সেই টুর্নামেন্টের এক মাস পরেই পেলেকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল।
২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে একটি টিউমার অপসারণের জন্য অস্ত্রোপচারের পর থেকে তিনি ডাক্তারদের কাছ থেকে নিয়মিত চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। কিন্তু ২০২২ সালের শেষের দিকে তাঁকে আবারও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তার অবস্থার উন্নতি হয়নি। কাতার বিশ্বকাপজুড়ে এবং এরপর ক্রিসমাসের সময়েও পেলে সাও পাওলোর হাসপাতালটিতে চিকিৎসাধীন ছিলেন। পেলের মেয়ে কেলি নাসিমেন্তো পুরো সময়জুড়ে অসুস্থ বাবার স্বাস্থ্যের খবরাখবর বিশ্ববাসীকে জানিয়েছিলেন।
পেলের এই মৃত্যুবার্ষিকীতে বিশেষ ভাবে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেছে ব্রাজিলিয়ানরা। রিও ডি জেনেইরোতে স্থাপনা ‘ক্রাইস্ট দ্য রিডিমার’র মূর্তিতে পেলের পরা ১০ নম্বর জার্সি লেজার শোয়ের মাধ্যমে পরানো হয়। পেলের স্পোর্টসম্যানশিপ সম্পর্কে পোপ ফ্রান্সিসের এক বার্তাও তুলে ধরা হয় সেখানে।
ব্রাজিল ফুটবল ‘ক্রাইস্ট দ্য রিডিমার’র সেই ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘এক্স’এ শেয়ার করে লিখে, ‘আজ রাতের ক্রাইস্ট দ্য রিডিমার। আজকের দিনেই গত বছর পেলে আমাদের ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন। ’
পেলের ত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধা জানায় ফিফাও। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘এক্স’এ পেলের বিশ্বকাপ ম্যাচের এক ভিডিও শেয়ার দেয় বিশ্ব ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি। ক্যাপশনে তারা লিখে, ‘১৯৪০-২০২২। পেলের শ্রেষ্ঠত্ব সমসময় থাকবে। ’
বর্ণিল এক জীবন কাটিয়েছেন পেলে। পেয়েছেন অনেক স্বীকৃতি। ১৯৯৯ সালে শতাব্দীর সেরা অ্যাথলেট হিসেবে স্বীকৃতি পান আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটির কাছ থেকে। ফিফার ‘প্লেয়ার অব দ্য সেঞ্চুরি’ হয়েছেন ম্যারাডোনার সঙ্গে যৌথভাবে।
১৩৬৩ ম্যাচ খেলে ১২৭৯ গোল করেছেন পেলে। ক্লাব ক্যারিয়ারের পুরোটাই তিনি কাটিয়েছেন সান্তোসে। ১৫ বছর বয়সে ক্লাব ও এক বছর পর জাতীয় দলের হয়ে অভিষেক হয় তাঁর। এরপর দেশের হয়ে ১৯৫৮, ১৯৬২ ও ১৯৭০ এর বিশ্বকাপ জেতেন পেলে। ১৯৭৭ সালে ফুটবলকে বিদায় বলেন এই কিংবদন্তি।