নিজস্ব প্রতিবেদক:
“আমরা (প্রার্থিতা) উন্মুক্ত করে দিয়েছি। এখানে একটা শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখার জন্য একটা অনুরোধ থাকবে,” জনসভায় বলেন তিনি।
বিএনপিকে ‘সন্ত্রাসী দল’ আর জামায়াতকে ‘যুদ্ধাপরাধী দল’ বর্ণনা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এ দুটি দল ছাড়া নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হবে না-এমনটা তিনি বিশ্বাস করেন না।
তিনি বলেছেন, “নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হবে জনগণের অংশগ্রহণ হলে, ভোটার উপস্থিতি হলে। ভোটারদের অংশগ্রহণে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হবে; আর আমরা সেটাই চাই।”
বৃহস্পতিবার তেজগাঁওয়ে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয় থেকে শেরপুর, জামালপুর, কিশোরগঞ্জ, চাঁদপুর ও বান্দরবানের নির্বাচনি জনসভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
শেখ হাসিনা বলেন, “এবারের নির্বাচন নিয়ে অনেক চক্রান্ত ষড়যন্ত্র আছে। বিএনপি-জামায়াতের কাজই হচ্ছে মানুষ পোড়ানো আর নির্বাচন ধ্বংস করা। কারণ নির্বাচিত সরকার-২০০৮ সাল থেকে ধারাবাহিকভাবে সরকারের আছি বলেই বাংলাদেশ উন্নত হয়েছে। এর আগে যারা ছিল, তারা দেশকে এক কদমও আগাতে পারেনি, বরং পিছিয়েছে।”
নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “আজকে অগ্রযাত্রা অব্যাহত আছে। একমাত্র আওয়ামী লীগই উন্নয়নের অগ্রযাত্রা ধারাবাহিক রাখতে পারে। সেই অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে নৌকা মার্কায় ভোট দেওয়ার জন্য ঘরে ঘরে যাবেন। “এবার যেহেতু জাতীয় ও অন্তর্জাতিকভাবে ধারাবাহিকভাবে চক্রান্ত হচ্ছে- নির্বাচনে যেন একটা পরিবেশ হয়, প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হয়, উৎসবমুখর হয়।”
ভোট বর্জনে থাকা বিএনপি প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, “ওরা নির্বাচনে বিশ্বাসও করে না। আর ওদের দিয়ে মানুষের কোনো কল্যাণ আসবে না। দুর্নীতি ছাড়া এরা কিছুই দিতে পারবে না। সেই কারণেই আমরা (প্রার্থিতা) উন্মুক্ত করে দিয়েছি। এখানে একটা শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখার জন্য একটা অনুরোধ থাকবে।
“যার যার ভোট সে চাইবে; ‘আমার ভোট আমি দেব, যাকে খুশি তাকে দেব’। এটা তো আমাদেরই স্লোগান। এই স্লোগান দিয়েই আমরা গণতন্ত্র ফিরিয়ে নিয়ে এনেছি।”
শেখ হাসিনা বলেন, “২০০৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ এককভাবে ২৩৩টি সিটে আমরা জয়লাভ করি। আর বিএনপি ও তার ২০ দলীয় জোট জামাতকে নিয়ে মাত্র ৩০টি সিট পায়। এবং তারপর থেকে বিএনপির কাজ হচ্ছে নির্বাচন বিরোধী কার্যক্রম। ২০০১ এর নির্বাচনে ক্ষমতায় আসার পর চারিদিকে বোমা-হামলা-দুর্নীতি-লুটপাট-মানি লন্ডারিং, এমন কোনো কাজ নেই, যা করে নাই। “এ কারণে ২০০৮ সালের নির্বাচনে জনগণ তাদেরকে প্রত্যাখ্যান করে। এরপর ২০১৩, ২০১৪ সালে গিয়ে আবার অগ্নি সন্ত্রাস শুরু করে। পাঁচশটা ভোটকেন্দ্র জ্বালিয়ে দেয়, ৭০টা সরকারি অফিস জ্বালিয়ে দেয়, প্রায় তিন হাজার ২২৫টি গাড়ি, ২৫টি লঞ্চ, রেল, বাসে আগুন দিয়ে মানুষ পোড়ায়। ঠিক একই কাজ আবার তারা শুরু করেছে।”
তিনি বলেন, “রেলে আগুন দিয়ে যেভাবে মা ও শিশুকে হত্যা করেছে, সহ্য করা যায় না। বাসে হেলপার ঘুমিয়ে আছে, সেই ঘুমন্ত মানুষটাকে তারা হত্যা করেছে। আবার সেই অগ্নিসন্ত্রাস শুরু করেছে, বোমাবাজি ককটেল মারা শুরু করেছে।
“কাজেই এরা নির্বাচন সবসময় বানচাল করার তালে থাকে। নির্বাচিত সরকার ছাড়া বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন হয়নি, এটা হল বাস্তব কথা।”
দেশের মানুষের জীবনমান উন্নত হয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “সেই উন্নত জীবনের ধারা অব্যাহত রেখে দেশের মানুষের জীবনমান যেন আরও সুন্দর করতে পারি, বিশেষ করে আমাদের নতুন প্রজন্মের জন্য। আজকে যে শিশুটা জন্ম নিয়েছে, সেই শিশুটাও যেন একটা সুন্দর জীবন পায়, উন্নত জীবন পায়; সেই লক্ষ্যটা রেখেই আমাদের পরিকল্পনা।
“যারা নৌকা মনোনয়ন পেয়েছেন, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা আপনারা ইশতেহারটা পড়বেন, এই লক্ষ্য নিয়ে জনগণের কাছে যাবেন, ভোট চাইবেন।”
জনসভায় আওয়ামী লীগ মনোনীত শেরপুর, জামালপুর, কিশোরগঞ্জ, চাঁদপুর ও বান্দরবান জেলার প্রার্থীদের পরিচয় করিয়ে দেন দলের সভাপতি শেখ হাসিনা।