ভোলা প্রতিনিধি :
ভোলার মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীতে জেলেদের জালে মিলছে না কাঙ্ক্ষিত ইলিশ। ইলিশ না পেয়ে চরম হতাশা নিয়ে তীরে ফিরে আসছেন জেলেরা। তবে কিছুদিন আগে জেলেদের জালে ইলিশের পরিবর্তে পোয়া মাছ ধরা পড়লেও এখন তাও মিলছে না। যে কারণে অনেক জেলে দেনায় জর্জরিত হয়ে নদীতে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন। আবার অনেকে ঋণের বোঝার চাপে পালিয়ে গেছেন অন্য জেলায়।
ভোলা সদর উপজেলার ধনিয়া ইউনিয়নের তুলাতুলি এলাকার মেঘনা নদীর তীরে সরেজমিন দেখা গেছে, একপাশে দুই কিলোমিটার এলাকায় পুরো খালি। জেলেদের দেখা নেই। অন্যপাশে নৌকা ও ট্রলার নিয়ে কিছু জেলে মাছ শিকার করতে নেমেছেন নদীতে। একের পর এক জাল ফেলেও দেখা মিলছে না ইলিশের।
জেলে নাগর মাঝি ও রাসেল মাঝি জানান, এই শীতের মধ্যেও তারা নদীতে জাল ফেলেন। কিন্তু সেরকম ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে না। ট্রলারের ৪০০-৫০০ টাকা তেল খরচ করে কখনো তারা ৩০০-৪০০ টাকা আবার কোনো কোনো সময় পান ৫-৭ টাকা।
নাজিম মাঝি ও ইব্রাহিম মাঝি জানান, দীর্ঘদিন ধরে নদীতে ইলিশ মাছ পাওয়া যাচ্ছে না। কিছুদিন তারা প্রচুর পরিমাণ পোয়া মাছ পেলেও কয়েকদিন ধরে তাও পাচ্ছেন না। মাছ না পাওযায় ঋণের টাকাও পরিশোধ করতে পারছেন না তারা।
পর্যাপ্ত মাছ না পাওয়ায় ১০-১২ দিন নদীতে যাচ্ছে না শাহাবুদ্দিন মাঝি ও ইদ্রিস মাঝি। তারা বলেন, অনেক জেলে দেনায় জর্জরিত হয়ে ভোলা ছেড়ে ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় গিয়ে রিকশা চালাচ্ছেন, শ্রমিকের কাজ করছেন। আবারও কেউ দিনমজুরের কাজ করছেন। অনেকে ভোলায় থেকেও ওইসব কাজ করে সংসার চালাচ্ছেন।
এ বিষয়ে ভোলা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ বলেন, নদীতে কাঙ্ক্ষিত মাছ না পাওয়ায় জেলেরা কিছুটা কষ্টে রয়েছেন। তবে সাগর ও সাগর মোহনায় জেলেদের জালে ধরা পড়ছে প্রচুর ইলিশ। কিছুদিনের মধ্যে নদীতেও মিলবে ইলিশ। তখন জেলেদের কষ্ট দূর হবে।
ভোলার সাত উপজেলায় জেলে রয়েছেন প্রায় আড়াই লাখ। এদের মধ্যে সরকারি নিবন্ধিত জেলের সংখ্যা রয়েছে এক লাখ ৬৫ হাজার।