সিলেট অফিস :
সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরকে মধ্যপ্রাচ্যের সোনা চোরাকারবারিরা নিরাপদ রুট হিসেবে বেছে নিয়েছে। কখনও পায়ু পথে, কখন সোনার ডিম তৈরি করে কিংবা নেব্যুলাইজার মেশিনের ভেতরে করে নতুন নতুন কৌশলে সিলেট বিমানবন্দর দিয়ে সোনা চোরাচালান করা হচ্ছে।
চোরাচালানের সাথে জড়িত বাহকের বিরুদ্ধে থানায় মামলা হলেও দৃশ্যমান কোন অগ্রগতি হয় না? চোরাচালানের সাথে জড়িত মূল হোতারা সবসময় টাকার প্রভাবে থেকে যাচ্ছে ধরাছোঁয়ার বাহিরে। গত দুই বছরে সিলেট বিমানবন্দর থানায় কমপক্ষে ১০টি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় শনাক্ত হয়নি সোনা চোরাচালানের মূল হোতারা। সিলেটে এ পর্যন্ত যতগুলো সোনার চোরাচালান ধরা পড়েছে অধিকাংশই দুবাই থেকে আসা।
কাস্টমস গোয়েন্দার এক কর্মকর্তা বলেন, সোনার চালান আমরা আটক করলেও বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করে পুলিশ। তাই, চোরাচালানের মূল হোতা বা নেপথ্যে থাকাদের চিহ্নিত করার বিষয়টিও তারা ভালো বলতে পারবেন।
সিলেট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট এমাদ উল্লাহ শহীদুল ইসলাম বলেন, দেশে এতগুলো বিশেষায়িত তদন্ত সংস্থা থাকলেও কখনই ধরা পড়তে দেখা যায়নি মূলহোতাদের। সিলেট বিমানবন্দরে সোনার চোরাচালান বেশ উদ্বেগের বিষয়। বাহকের বিরুদ্ধে থানায় মামলা হলেও তদন্তে শনাক্ত হয়নি মূলহোতারা, এরকম নজিরও সিলেট রয়েছে।
তিনি বলেন, একযুগ থেকে সিলেটে নানা কৌশলে সোনার চোরাচালান বেড়েছে। শুরু করে এখন পর্যন্ত যতগুলো সোনার চোরাচালান ধরা পড়েছে সবকটিতে বাহক ধরা পড়ে। মূলহোতারা থেকে যায় সবসময় ধরাছোঁয়ার বাইরে। কাস্টমসসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন ইউনিটগুলোর পক্ষে মূলহোতাদের শনাক্ত করে বিচারের আওতায় নিয়ে আসা কষ্টকর বিষয় নয়। যে দেশ থেকে ফ্লাইট বাংলাদেশে আসছে দুই দেশের বিশেষায়িত ইউনিটগুলো এক হয়ে কাজ করলেই হোতারা ধরা পড়তো। কিন্তু কোনও গুরুত্ব নেই।
এদিকে, শুক্রবার সিলেটে বিমানবন্দরে দুবাই থেকে নিয়ে আসা চার যাত্রীর সিটের নিচে তল্লাশি করে ১০টি সোনার বারের বান্ডেল পাওয়া যায়। একইসঙ্গে বিমানের শৌচাগার থেকে চারটি সোনার বারের বান্ডেল ও ছয়টি সোনার ডিম উদ্ধার করা হয়। উদ্ধার করা সোনার বান্ডেলের ওজন ৩২ কেজি ৬৫ গ্রাম। ছয়টি সোনার ডিমের ওজন দেড় কেজি। সর্বমোট ৩৪ কেজি ১৫ গ্রাম সোনা উদ্ধার করা হয়েছে। এগুলোর মূল্য ২৬ কোটি ৫০ লাখ টাকা। সোনা চোরাচালান আটকের ঘটনায় কাস্টমসের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা মর্তুজা আলী বাদী হয়ে চার জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।